“বিজ্ঞান আমাদের জীবনকে
করেছে সুন্দর ও সমৃদ্ধ
জ্ঞানের এই জগতে
থাকবে না কেউ বদ্ধ।”
জ্ঞানের এই জগতে যেমন কেউ বদ্ধ হয়ে থাকবে না তেমনি বিজ্ঞানের এই যুগে থেমে নেই আমাদের টেক্সটাইল সেক্টরও। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ডানায় ভর করে মুক্তভাবে এগিয়ে চলেছে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে। আর এগিয়ে চলার এই পথের এক বিশাল সাফল্যের নাম হলো স্মার্ট ফেব্রিক্স।
স্মার্ট ফেব্রিক্স যা এক সময় মানুষের কাছে অলীক গল্পের কোনো জাদুর বস্তুর মত মনে হতো আজ তা আর অলীক গল্পের জাদুর বস্তুর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। জাদুর বেড়াজাল ভেঙ্গে আজ তা বাস্তব দুনিয়ায়। আর এটি সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে।
স্মার্ট ফেব্রিক্স বলতে সেই সকল ফেব্রিক্সকে বুঝায় যে ফেব্রিক্স গুলো অনুভূতি বা পরিবেশ পরিস্থিতি এবং উদ্দীপনা গ্রহণ করতে পারে। স্মার্ট ফেব্রিক্স হলো ই-টেক্সটাইলের একটি অংশ। স্মার্ট ফেব্রিক্স প্রযুক্তির অগ্রগতি স্মার্ট টেক্সটাইল এবং একাধিক শিল্পের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে যার পরিধি খেলাধুলা থেকে প্রতিরক্ষা পর্যন্ত বিস্তৃত।
স্মার্ট ফেব্রিক্স প্রযুক্তি সব সেক্টরে কতটা প্রভাব ফেলেছে তা এর বিকাশ পর্যালোচনা করলেই বোঝা যায়। আমরা যদি ২০১৭ সালের একটি পরিসংখ্যানের দিকে তাকাই তাহলে আমরা দেখতে পাবো যে সেই সময়ে স্মার্ট ফেব্রিক্সের বাজার মূল্য ছিল ১.৭২ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২৩ সাল নাগাদ যা ৪.০৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে যাচ্ছে।
স্মার্ট ফেব্রিক্স ইলেকট্রনিক ফেব্রিক্স,স্মার্ট গার্মেন্টস এবং ইন্টেলিজেন্ট ফেব্রিক্স এমন কিছু প্রযুক্তিগত উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত। এর মৌলিক উপাদান গুলো হতে পারে ব্যাটারি,লাইট, ইলেকট্রনিক চিপ অথবা কোনো সেন্সর। প্রযুক্তিটি বিভিন্ন পদ্ধতি যেমন: পরিবাহী তন্তু এবং মাল্টিলেয়ার 3d প্রিন্টিংয়ের মাধ্যমে ফেব্রিকের সাথে যুক্ত করা হয়।
স্মার্ট ফেব্রিক্সের মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যবহারকারীদের সর্বোচ্চ আরাম প্রদানের সাথে সাথে সর্বোচ্চ কর্মক্ষমতা এবং নিরাপত্তা প্রদান করা।ইলেকট্রনিক ডিভাইস গুলোর আকার ছোট হওয়া ও সেগুলোর উৎপাদন ব্যয় সস্তা হওয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে স্মার্ট ফেব্রিক্সের বাজার চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
স্মার্ট ফেব্রিক্স কে দুইটি বিভাগে ভাগ করা যেতে পারে:
★ এস্থেটিক ইঞ্জয়মেন্ট: এর মধ্যে রয়েছে আলোকসজ্জা বিশিষ্ট ফেব্রিক্স।এই বিভাগের মধ্যে এমন কিছু ফেব্রিক্স ও রয়েছে যেগুলো দেহের তাপমাত্রার পরিবর্তনের সাথে সাথে রং পরিবর্তন করে থাকে।
★ পারফরম্যান্স ইনহ্যান্সমেন্ট: এর মধ্যে অন্তর্গত স্মার্ট পোশাক গুলো দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং বিরূপ পরিবেশ থেকে দেহকে রক্ষা করে থাকে। এগুলো বিকিরণের মত ক্ষতিকারক পরিবেশ থেকে মানবদেহকে রক্ষা করে থাকে।
এম আই টি এর গবেষকরা সম্প্রতি স্মার্ট টেক্সটাইল গুলোতে সফট হার্ডওয়ার ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছেন। তারা সফট ওভেন এবং ওয়াশেবল ফেব্রিক্সে হাই স্পীড অপটোইলেক্ট্রনিক সেমিকন্ডাক্টর গুলো সফলভাবে বসাতে সক্ষম হয়েছেন। স্মার্ট ফেব্রিক্সে এই সেমিকন্ডাক্টর গুলোর সফল অন্তর্ভুক্তি স্মার্ট টেক্সটাইল জগতে বড় অগ্রগতির দ্বার উন্মোচিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। (টু বি কন্টিনিউড….)
তথ্যসূত্র: software design solutions, Loomia, ScienceDirect.
লেখক-
মো:মাহমুদুল ইসলাম
ডিপার্টমেন্ট অব ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং (১ম ব্যাচ)
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ।