হোমটেক টেক্সটাইল টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের অন্তর্ভুক্ত যা বর্তমানে টেক্সটাইল শিল্পের একটি জনপ্রিয় শাখা। হোমটেক টেক্সটাইল বলতে মূলত গৃহসজ্জায় ব্যবহৃত সামগ্রীকেই বুঝায় যা ঘরের সৌন্দর্যবর্ধনে সহায়ক।হোমটেক টেক্সটাইল সামগ্রী তৈরি হয় নিটিং,উইভিং,ক্রকেটিং,নটিং কিংবা ফাইবারের থেকে।
চীন,জাপান,ভারত, পাকিস্তান ইত্যাদি দেশে (হোমটেক টেক্সটাইল) এর প্রচলন বহু আগে শুরু হলেও বাংলাদেশে এর যাত্রা শুরু হয় ১৯৮০ সালে নীট সামগ্রীর মাধ্যমে।হোমটেক টেক্সটাইল এর সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টরিটি হচ্ছে এসিএস (ACS) টেক্সটাইল যা ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং এর সামগ্রী ইতালি, ফ্রান্স, ইউকে প্রভৃতি দেশে পাওয়া যেত কিন্তু ২০০৪ সালে তা অস্ট্রেলিয়া ও উত্তর আমেরিকাও এর অন্তর্ভুক্ত হয়।বাংলাদেশে হোমটেক টেক্সটাইলের এর কারখানা রয়েছে গুটিকয়েক জায়গাতেই যেমন, ঢাকা,গাজীপুর, চট্টগ্রাম। এই শিল্পের সামগ্রী গৃহসজ্জার সামগ্রী নামেই বহুল পরিচিত। হোমটেক টেক্সটাইলের সামগ্রীকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।
✨বেডরুম প্রোডাক্টস
✨কিচেন প্রোডাক্টস
✨বাথরুম প্রোডাক্টস
এই বেডরুম প্রোডাক্টসের মধ্যে আছে বেডশিট বা বিছানার চাদর, পিলো কভার,কম্বল,কার্পেট, পর্দা,কুশন ইত্যাদি।
কিচেন প্রোডাক্টসের মধ্যে আছে টেবিল ক্লথ,এপ্রোন,ক্লিনিং ক্লথ।আর সবশেষ বাথরুম প্রোডাক্টসের মাঝে আছে ম্যাট,টাওয়াল বা তোয়ালে,বাথ রোবস,শাওয়ার কার্টেন ইত্যাদি। এছাড়াও বর্তমানে জুট ফাইবার থেকেও মাদুর তৈরি করা হয় আর এমন তোয়ালেও রয়েছে যা দ্রুত পানি শোষণ করে এবং শুকিয়ে যায়। তাছাড়াও বিছানার চাদর , কুশন তৈরিতে কটন বা লিনেন ফাইবার এর ব্যবহার,পর্দা,শাল,কার্পেট তৈরিতে পলিয়েস্টার বা ভিন্ন ধরনের ফাইবার ব্যবহৃত হয় যা শক্তিশালী হতে হবে যাতে সহজে ছিঁড়ে না যায়, নমনীয়, আরামদায়ক হয় এবং স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার হয় এছাড়াও ঘরকে নান্দনিক করে গড়ে তুলতে গৃহসজ্জায় ও এর ব্যবহার রয়েছে। গৃহের অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যবর্ধনে যেসকল সামগ্রী বা শিল্পের ব্যবহার আছে তার সবই প্রায় হোমটেক টেক্সটাইল এর মধ্যে পড়ে।হোমটেক টেক্সটাইল এর এই ব্যবহার টেক্সটাইল এ একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে কারণ পূর্বে টেক্সটাইলের ব্যবহার কেবল পোশাক বা শিল্পকারখানায়ই সীমাবদ্ধ ছিল কিন্তু বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে প্রযুক্তির বহুল ব্যবহারের ফলে এটি গৃহ সামগ্রী ও সৌন্দর্যবর্ধনের মতো নিপুণ কাজেও ব্যবহৃত হয়।
তাছাড়া বর্তমানে হোমটেক এর ব্যবহার বাংলাদেশ ছাড়িয়ে সারা বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত, সমাদৃত ও জনপ্রিয়তা লাভ করেছে আধুনিকায়নের কারণে কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে বাংলাদেশ এখনও খুব একটা জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি এই সেক্টরে কারণ অধিকাংশ ফাইবার কিংবা এর কাঁচামাল আমাদের বাইরের দেশ থেকে আমদানি করতে হয় যার ফলে তাতেই অনেক খরচ চলে আসে আর অধিক ফাইবার উৎপাদন করা কিংবা ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো সবসময় সম্ভব হয়ে উঠে না।তবে এ সমস্যা থেকে উত্তরনের জন্য দেশের সফল ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা এবং ধন্যাঢ্য ব্যক্তিদের এগিয়ে আসতে হবে, অর্থ ব্যয় করে এই শিল্পটিকে দাঁড় করাতে এবং এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এরই পাশাপাশি সরকারকেও এ বিষয়ে সহায়তা করতে হবে এবং এই শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।তাছাড়া হোমটেক্সের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে যদি উদ্ভাবনী শক্তি এবং গবেষণার জন্য বিশেষ সুযোগ করে তা যথাযথ উপায়ে কাজে লাগানো যায় এবং সামগ্রী তৈরি করে তা সঠিকভাবে বাজারজাত করে জনসাধারণের কাছে সুলভ মূল্যে পৌঁছে দেয়া যায়।আর ভবিষ্যতে এ শিল্পের গবেষণা, চর্চা আরও বৃদ্ধি করে নতুন নতুন আবিস্কারের মাধ্যমেও হোমটেক টেক্সটাইলকে সমৃদ্ধ করা যাবে।
তথ্যসূত্র :গুগল, উইকিপিডিয়া,ইউটিউব
Writer Information:
Tasnim Tajmi Islam Arjita
Ahsanullah University of
Science and Technology
Department of Textile Engineering
(Batch-40)
1st year 2nd semester