সময়ের সাথে সাথে বর্তমানে সমগ্র পৃথিবীতে All-Over printed টেক্সটাইল প্রোডাক্টের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশের টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিগুলোতেও বিপুল হারে All-Over printing এর অর্ডার আসতে শুরু করেছে।
গত পর্বে All-Over printing এর জন্য যেসব মেশিন ব্যবহার করা হয় সে সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলাম।
গত পর্বের লিংক- https://www.textileengineers.org/all-over-printing-part-1/
আজকের পর্বে All-Over printing এর অর্ডার নেওয়ার পূর্বে Buyer এর কাছ থেকে যেসব তথ্য অবশ্যই জেনে নেওয়া প্রয়োজন সে সম্পর্কে আলোকপাত করবো।
All-over printing এর ডিজাইন receive করার সময় Buyer এর কাছ থেকে সাধারনত ১০ টি তথ্য ভালোভাবে নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এই ১০ টি তথ্যের উপর নির্ভর করেই সম্পূর্ণ ডিজাইনটি develop করা হয়। যে তথ্যগুলো buyer এর কাছ থেকে জেনে নেওয়া প্রয়োজন সেগুলো হলো-
১. Repeat: Repeat হলো all-over design এর মূল প্যাটার্ন। All-over printing এর ক্ষেত্রে সাধারনত একটি repeat সম্পূর্ণ ফেব্রিকে continuously প্রিন্ট হয়। এই repeat পুরোপুরি পারফেক্ট না হলে design develop করা এবং Buyer এর requirement অনুসারে প্রিন্ট করা সম্ভব হয় না।
Buyer সাধারনত ৩ টি মাধ্যমে design সাবমিট করে থাকে। এগুলো হলো- ১. Softcopy, ২. Hardcopy, ৩. Fabric sample. Buyer এর কাছ থেকে design receive করার সময় তাতে সঠিকভাবে repeat আছে কি না তা ভালোভাবে দেখে নিতে হয়।
২. Repeat measurement: Rotary printing machine এ প্রিন্ট করার ক্ষেত্রে Buyer এর দেওয়া design এর repeat measurement ঠিকঠাক আছে কি না তা ভালোভাবে যাচাই করে নিতে হয়। সাধারনত 64.15 cm, 82 cm এবং 91.4 cm এই ৩টি diameter এর স্ক্রিন দিয়ে all-over printing সম্পন্ন করা হয়। Rotary screen এর এই diameter এর সাথে ক্যালকুলেশন করে design এর repeat measurement নির্ধারন করা হয় এবং সেই measurement অনুযায়ী ডিজাইনটি ফেব্রিকে প্রিন্ট করা হয়। তাই Buyer এর থেকে design receive এর সময় repeat measurement জেনে নেওয়া জরুরি।
৩. Clear design file: Design এর ক্ষেত্রে image ২ ধরনের হয়ে থাকে। এগুলো হলো – ১. Raster image ২. Vector image. Raster image এর মাধ্যমে design develop করতে সাধারনত সময় বেশি লাগে এবং original artwork থেকে ডিজাইন কিছুটা পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই Design টিকে vector image এ convert করে প্রিন্টিংয়ের জন্য screen preparation করতে হয়।
এজন্য Buyer এর কাছ থেকে design receive করার সময় vector image, download link file, ai file বা high resulation file নিতে হয়।
৪. Print paste type: Buyer এর কাছ থেকে design receive করার সময় বা অর্ডার নেওয়ার সময় অবশ্যই print paste type জেনে নেওয়া দরকার। সাধারনত ৬ ধরনের print paste দিয়ে all-over print করা হয়। এগুলো হলো- ১. Pigment ২. Reactive ৩. Discharge ৪. Resist ৫. Burnout ৬. Glitter. এগুলোর মধ্যে কোন ধরনের print paste দিয়ে ফেব্রিকটি প্রিন্ট করতে হবে তা buyer এর থেকে জেনে নেওয়া প্রয়োজন। তা সম্ভব না হলে ফেব্রিকের construction এর উপর নির্ভর করে print paste সিলেক্ট করতে হয়। এক্ষেত্রে export oriental factory তে pigment print সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে, কারন এতে cross linking agent হিসেবে binder ব্যবহার করে যেকোনো ধরনের ফেব্রিকে প্রিন্ট করা যায়।
৫. Fabrication: কোন ধরনের ফেব্রিকের উপর all-over design টি প্রিন্ট হবে তা অর্ডার নেওয়ার সময় অবশ্যই buyer এর কাছ থেকে জেনে নিতে হয়। সাধারনত Lycra/single jersey ফেব্রিকে প্রিন্টিংয়ের পর ফেব্রিকের shrinkage এর কারনে design এর repeat measurement 10%-18% কমে যায়। কিন্তু woven, knit, polyester এসব ফেব্রিকে প্রিন্টিংয়ের পর measurement এর তেমন তারতম্য হয় না। তাই এই বিষয়গুলো buyer এর সাথে আলোচনা করে confirmation নিতে হয়।
৬. Number of Print Color: অর্ডার নেওয়ার সময় Buyer এর প্রদত্ত ডিজাইনটিতে কতটি color রয়েছে তা নিশ্চিত হয়ে নেওয়া জরুরি। আমাদের দেশে সাধারনত rotary বা flatbed printing machine এ ১০-১২ টির বেশি color প্রিন্ট করা সম্ভব হয় না। তাই অর্ডার নেওয়ার সময় এই বিষয়টি ভালোভাবে দেখে নিতে হয়।
৭. Fabric GSM/Fabric Width: Buyer এর কাছ থেকে all-over printing এর অর্ডার নেওয়ার সময় যে ফেব্রিকের উপর প্রিন্ট করা হবে তার GSM এবং Width জেনে নেওয়া জরুরি। Knit fabric এর ক্ষেত্রে printing cost সাধারনত KG তে হিসাব কর হয়। এক্ষেত্রে fabric এর GSM যত কম হবে, fabric print এর পরিমান তত বাড়তে থাকবে। এজন্য printing cost ও বেড়ে যাবে।
অপরদিকে Woven ফেব্রিকে printing cost Yard এ হিসাব করা হয়। তাই ফেব্রিকের Width যত বেশি হয়, তত বেশি ফেব্রিক প্রিন্ট করতে হয় এবং প্রিন্টিং ম্যাটারিয়াল বেশি ব্যবহার করতে হয়। এক্ষেত্রে printing cost বেড়ে যায়। তাই print costing নিয়ে এসব সমস্যা এড়ানোর জন্য অর্ডার নেওয়ার সময় ফেব্রিকের GSM এবং Width জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
৮. Base/Ground/Dyeing color: Printing এর অর্ডার নেওয়ার সময় ফেব্রিকের base color জেনে নিতে হবে। কারন যেকোনো ফেব্রিকের উপর যেকোনো print paste দিয়ে প্রিন্ট করা যায় না। নির্দিষ্ট base color এর জন্য নির্দিষ্ট print paste ব্যবহার করা হয়। তা না হলে perfect shade নিয়ে আসা যায় না। একারনে সঠিক print paste নির্ধারন করার জন্য buyer এর কাছ থেকে ফেব্রিকের base/ground color জেনে নিতে হবে।
৯. Sample Category: Buyer এর প্রদত্ত ডিজাইনকে সাধারনত ৩ টি ক্যাটাগরিতে develop করে submit করতে হয়। এগুলো হলো- ১. Hand sample ২. Machine sample ৩. Direct production. Color swatch, handfeel, design structure সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না তা approve করে final production এর জন্য Buyer কে তার নির্দেশনা অনুযায়ী স্যাম্পল submit করতে হয়। তাই অর্ডার নেওয়ার সময়ই buyer এর থেকে sample catagory জেনে নেওয়া জরুরি।
১০. Pantone/Color swatch: Buyer এর প্রদত্ত ডিজাইনে যে কয়টি color আছে, সেগুলোর pantone no. বা color swatch জেনে নেওয়া প্রয়োজন। সঠিক pantone no. জেনে না নিলে ডিজাইনের সাথে সম্পূর্ণ মিল রেখে color shade তৈরি করা যায় না। এর ফলে buyer এর দেওয়া ডিজাইনের সাথে printed fabric এর কিছুটা বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। তাই অর্ডার কনফার্ম করার সময় অবশ্যই ডিজাইনের pantone no. এবং সঠিক color swatch buyer এর কাছ থেকে জেনে নিতে হয়।
অর্ডার নেওয়ার সময় উপরের ১০ টি বিষয় অবশ্যই Buyer এর কাছ থেকে জেনে নেওয়া প্রয়োজন এবং লিখিত কনফার্মেশন নিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। তা না হলে design develop করা সম্ভব হয় না। সবগুলো ইনফরমেশন নিয়ে অর্ডার কনফার্ম করার পর design develop করার জন্য তা CAD section এ পাঠানো হয়।
All-over printing এর ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে কিছু fault লক্ষ্য করা যায়। যেসব কারনে প্রিন্টিংয়ে fault দেখা যায় সেগুলো হলো-
১. Rod Pressure
২. Color Viscosity
- Color recipe
- Mesh selection
এগুলো সঠিকভাবে না হলে all-over printing এ কিছুটা সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই Fault এড়ানোর জন্য এই বিষয়গুলোর দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
সমগ্র পৃথিবীর টেক্সটাইল সেক্টরে বাংলাদেশের টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি বেশ গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। বর্তমানে সারা বিশ্বে all-over printing এর চাহিদা বেড়েই চলেছে। তাই all-over printing এর ডিজিটাল প্রযুক্তিগুলো বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে নিয়ে আসা এবং দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের টেক্সটাইল সেক্টরকে আরো অনেকদূর নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
আর্টিকেলটি লিখতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সহায়তা করায় বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি-
Shawkat Hossain Sohel
Chief Designer
Unifill Composite Dyeing Mills Ltd.
Writer Information:
Raktim Roy
Department of Textile Engineering (2nd Batch)
Jashore University of Science & Technology