Friday, November 22, 2024
Magazine
More
    HomeLife Style & Fashionগৃহসজ্জা ও দৈনন্দিন জীবনে টেক্সটাইল হস্তশিল্প

    গৃহসজ্জা ও দৈনন্দিন জীবনে টেক্সটাইল হস্তশিল্প

    বাঙ্গালীর ইতিহাস জুড়ে এক বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে হস্তশিল্প এর ইতিহাস। প্রাচীন কালে যখন ছিলো না কোনো প্রযুক্তিচালিত মেশিন তখন জীবন ধারনের জন্য মানুষ তৈরি করেছে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। সেই সুত্রেই টেক্সটাইল ফ্রেব্রিকের ব্যাবহার এর সাথে বানানো হয়েছে অনেক হস্তশিল্প সামগ্রী। 

    হাত-পাখা

    বহু বহু বছর আগে থেকেই হাত পাখার চল ভারতীয় উপমহাদেশে। বিদ্যুৎ আবিস্কার এর পূর্বে গরম নিবারনে হাত পাখার গুরুত্ব ছিল অপরীসিম। হাত পাখার দুটির অংশের প্রধান যে অংশ সেটি তৈরি হয়ে থাকে কিছুটা মোটা কাপড়ের অংশ দিয়ে। এটি গোলাকার আকৃতির হয়ে থাকে।বাংলা নারীরা কাপড়ের উপর বিভিন্ন ফুল-পাতার নকশা করে হাত পাখার সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি করতো। বর্তমানে অনুন্নত গ্রাম অঞ্চলেই শুধু এর ব্যবহার হয়ে থাকে। তাছাড়া শহরে এখন হাত পাখা ঘড়ের সৌন্দর্য বর্ধনে ব্যাবহার করা হচ্ছে।

    নকশিকাঁথা

    নকশিকাঁথা বাংলার এক অনন্য ব্যবহার্য সামগ্রী।এই নকশিকাঁথার কদর এক সময় এতো বেশি ছিলো যে কবি জসিমউদ্দিন  তার গ্রন্থের নাম রচনা করেন ‘ নকশিকাঁথার মাঠ’।কাথাঁ তৈরির জন্য এ দেশের নারীরা সুই-সুতা দিয়ে সেটি সম্পুর্ন সেলাই করতো।সেই সেলাই এ তারা ফুটিয়ে তুলতো তাদের মনের গাথুনী। হরেক রকম মনো মুগ্ধকর ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা হতো এক একটা কাথাঁয়। এতো সুক্ষ্ম এবং সুন্দর নকশা ডিজাইন এর কাঁথা তৈরি করত্র সময় লেগে যেতো প্রায় ১০-১২ দিন। কোনো রকম যন্ত্র ছাড়াই হাত সেলাই এর মাধ্যমে তৈরি হতো এসব কাথাঁ।বর্তমানে বিভিন্ন দেশীয় ফ্যাশন হাউসে বেশ উচ্চ মূল্য বিক্রয় হয় নকশিকাঁথা।  বাংলাদেশের কিছু এলাকায় নারীরা এখনো এই কাথাঁ সেলাই করে সংসারের উপার্যনে সাহায্যে করে দিন যাপন করছে



    কুশিপন্য

    কুশি কাটার সৌখিন জিনিস ব্যবহার করেনি এমন বাঙ্গালীর সংখ্যা নগন্য। কুশিপন্য হলো সুতা দিয়ে বানানো এক হস্ত শিল্প। একটি বিশেষ সুই এর মাধ্যমে সুতার সাথে সুতার বুননে এই জিনিস তৈরি করা হয়। যেখানে শুধু সুতা দিয়েই বিভিন্ন ফুল-পশু-পাখির আকৃতি তুলে ধরা হয়। এক সময় কুশিপন্য দিয়ে বানানো এইসব শোপিস প্রায় সবার বাসায় দেখা মিলতো। এছাড়া কুশি কাজের লেইসও জামায় ব্যাবহার করা হয়। সোয়েটার, টুপি,কুশন, টেবিল ম্যাট বানানো হয় কুশি কাজের মাধ্যমে। এখন শুধু মাত্র কিছু কিছু পোশাকে এর উপস্থিতি লক্ষনীয়।




    পাটের জুতা

    বর্তমানে আমরা চাই সব কিছুই যাতে বায়ো ডিগ্রেডেবল ভাবে বানানো হয়।এতো কোনো জিনিস ব্যবহার এর পর তা মাটির সাথে মিশে যাবে এবং পরিবেশ এর ভারসাম্য রক্ষার্থে তা ভূমিকা রাখবে। সেই চিন্তা ধারা থেকেই আবিষ্কার হয়েছে ‘পাটের জুতা’। পাট এর একটি ভিন্ন ব্যাবহার হলো এটি দিয়ে এখন জুতাও তৈরি হচ্ছে। এখানে যেমন অনেক সুন্দর ডিজাইন দেয়া হচ্ছে, তেমনি এটি ব্যাবহারেও আরামদায়ক। পুরোনো হয়ে গেলে এটি এক সময় মাটির সাথে মিশে যায়।এতে অন্য সকল প্লাস্টিক /স্পঞ্জ এর জুতার মতো এই জুতা পরিবেশ এর ক্ষতি করে না।যদিও এর ব্যবহার এখনো জনপ্রিয়তা পায়নি। তবে এর উপকারী দিক সম্পর্কে সকলে জানলে ভবিষ্যতে এর ব্যাবহার বহুগুন বেড়ে যাবে বলে আশা করা যায়



    ফ্রেব্রিক ফ্লাওয়ার

    ‘কাপড়ের তৈরি ফুল’ জিনিসটার সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত। আমাদের দেশে গৃহ সজ্জায় প্লাস্টিকের ফুলের কদর অনেক বেশি। সেই প্লাস্টিকের ফুলের সাথে পাল্লা দিচ্ছে কাপড়ের ফুল। কাপড়ের ফুল এখন গৃহসজ্জায় ব্যাবহৃত হচ্ছে হরমশেই। এই ফুলের ব্যাবহার সবথেকে বেশি মেয়েদের জামায়। জামার ডিজাইন এ ভিন্নতা আনতে জামায় কাপড়ের উপর ব্যবহার হয় ছোট-বড় রঙ্গিন কাপড়ের ফুল। তাজা ফুলের গহনার বিকল্প হিসেবে কাপড়ের ফুলের ব্যাবহার এখন খুব বেশি চোখে পড়ছে।কাপড় দিয়ে বানানো হলেই এর সৌন্দর্য কোনো অংশেই কম হয়।সুতি কাপড়,টিস্যু কাপড়, ভেলভেট কাপড় দিয়ে মেশিন এর সাহায্য এইসব ফুল বানানো হ য়। ফ্যাশন এর ক্ষেত্রের পাশাপাশি গৃহসজ্জাতেও কাপড়ের ফুলের ব্যাবহার দিন দিন বাড়ছে।




    হস্তশিল্পের এইসব জিনিস আমাদের ইতিহাস ও ঐশ্বর্য।এইগুলা রক্ষা করা এবং নিত্য প্রয়োজনে ব্যবহার করা আমদের দায়িত্ব। যদি আমার আমাদের শিল্পকে রক্ষা না করতে পারি তাহলে একদিন এই সব টেক্সটাইল শিল্প বিলীন হয়ে যাবে। বহিবিশ্বের দরবারেএইসব শিল্পকে তুলে ধরার জন্য আমাদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শিল্পকলা অনুষ্ঠানে এই শিল্পকর্মের প্রদর্শনী করাতে হবে। 


    সোর্সঃ গুগল,উউইকিপিডিয়া 
    ছবিঃ ইন্টারনেট 


    Writers’ Information :
    Name: Nure Arfi
    Batch: 39th
    Semester: Second year, First semester 
    University: Ahsanullah University Of Science and Technology

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Related News

    - Advertisment -

    Most Viewed