কিছু সময় এর জন্য টেক্সটাইলবিহীন একটি পৃথিবী কল্পনা করুন। একটি জায়গা যেখানে আরামদায়ক বালিশ গাছের কান্ড দ্বারা তৈরি হয়। যেখানে পর্দাগুলি শীট ধাতু দিয়ে তৈরি হয়, কম্বলগুলি বালির তৈরি এবং সোফাগুলি ক্যাকটাস দিয়ে তৈরি। সুতরাং বলা যেতে পারে টেক্সটাইলবিহীন পৃথিবীটি অনেক কষ্টকর । টেক্সটাইল পণ্যগুলি মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা প্রায়শই কেবল টেক্সটাইল বলতে বুঝি পোশাক শিল্প , আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক ব্যাবহারিকসামগ্রী টেক্সটাইল এর অংশ। তবে, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে টেক্সটাইল প্রয়োজনীয়।
টেক্সটাইল এর সাথে সম্পর্কিত সকল কিছু আরো উন্নত করতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার এর প্রয়োজন । টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের একটি নির্দিষ্ট রূপ যা বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন পণ্য তৈরিতে জোর দেয়। উদাহরণস্বরূপ, তাপ-প্রতিরোধী কাপড় ওভেন গ্লাভসের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে গ্রীষ্মের পোশাকের জন্য শ্বাস ফেলা কাপড় ব্যবহার করা যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, একটি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বিপণন ও বিক্রয় প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে, নতুন উপকরণগুলি গবেষণা করে এবং সমস্ত চূড়ান্ত পণ্য প্রত্যাশিত সুরক্ষা এবং মানের মান পূরণ করে তা নিশ্চিত করে। আমাদের দেশে সাধারণ মানুষ এর মাঝে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং শব্দটি অপরিচিত । তাই অধিকাংশ মানুষ ভেবে থাকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার শুধু মাত্র গার্মেন্টস এ চাকরি করে । এই পৃথিবীতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরির ক্ষেত্র অনেক । তাদের মধ্যে অন্যতম হল Technical Textiles ,
Knitting and Knit CAD,
Weaving and Weave CAD,
Coloration Technology,
Yarn and Non-woven Technology,
Textile Materials and Performance,
Evaluation Textile chemical technology,
Fibre science technology,
Computer application in textile.
টেক্সটাইল গ্র্যাজুয়েটের জন্য চাকরি পাওয়া কোনও বড় বিষয় নয়। একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারের স্নাতক শেষ হওয়ার পরে অনেকগুলি বিকল্প রয়েছে। তিনি একজন মার্চেন্ডাইজার, গার্মেন্টস টেকনোলজিস্ট হিসাবে, প্রোডাকশন ম্যানেজার এবং আরও অনেক কিছুর কাজ করতে পারেন। বস্ত্র মন্ত্রকের অধীনে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারের সরকারি চাকরিতেও সুযোগ রয়েছে। এখনকার দিনের আধুনিক টেক্সটাইল শিল্পটি বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০১১/২০১২ এবং ২০১৭/২০১৮ এর মধ্যে টেক্সটাইল রফতানির বৃদ্ধির হার ৬০% ছিল এবং এটি মোট রফতানির প্রায় ৮৫% বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আরএমজি রফতানিকারক দেশ। তারা 2020/2021 সালে এই খাত থেকে 50 বিলিয়ন ডলার আয় করার লক্ষ্য নিয়েছিল । কিন্তু বর্তমান করণাকালীন সময়ের জন্য তা সম্ভব হয়নি । তাই বাংলাদেশের এই খাতটি আরো শক্তিশালী করতে এবং এই বিশ্ববাজারে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে সর্বদা দক্ষ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের প্রয়োজন হবে । বর্তমান যুবসমাজ এর মাঝে যেকোনো চাকরির ক্ষেত্রে মাসিক আয় অনেক গুরুত্ব পুন্য । তাই বলে রাখা ভালো যে একজন সদ্য ভার্সিটি থেকে বের হওয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার ফ্যাক্টরিতে গিয়া আরো অনেক কিছু শিখে । টেক্সটাইল এর মধ্যে শিক্ষার পাশাপাশি অভিজ্ঞতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ । তাই নতুন চাকরিতে নিযুক্ত হইবার পর আপনি কাজ শিখতে থাকবেন পাশাপাশি ১৫-২৫ হাজার টাকা সম্মাননা পাবেন । কিন্তু ৩-৫ বছরের অভিজ্ঞতা অর্জনের পর আপনি আপনার আপনার দক্ষতা দিয়া অনায়াসেই ৩০-৫০ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারবেন । টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে খুব তাড়াতাড়ি আয় বৃদ্ধি পায় ।
লেখক :
সাবের রুহুল ইসলাম
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ (৩৯ ব্যাচ )
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি