মসলিন বিশেষ এক প্রকার তুলার আঁশ থেকে প্রস্তুতকৃত সুতা দিয়ে বয়ন করা এক প্রকারের অতি সূক্ষ কাপড় বিশেষ। এটি ঢাকায় মসলিন নামে ও সুবিদিত। মসলিনের ঐতিহ্য হাজার বছরের। মসলিন প্রস্তুত করা হত পূর্ব বাংলার সোনারগাঁও অঞ্চলে৷ কথিত আছে যে মসলিনে তৈরী করা পোশাক এতই সূক্ষ ছিল যে ৫০ মিটার দীর্ঘ মসলিনের কাপড়কে একটি দিয়াশলাই বাক্সে ভরে রাখা যেত। মসলিনের পার্থক্য করা হত সূক্ষতা, বুননশৈলী আর নকশায়। এরই প্রেক্ষিতে গবেষণা থেকে বিভিন্ন প্রকার মসলিনের আলাদা আলাদা নামকরণ ও হয় । যেমন – মলবুস খাস, সরকার-ই-আলা, ঝুনা, আব-ই-রওয়ান, খাসসা, শবনম, নয়ন সুখ, বদন খাস, সর বন্ধ, জেরিয়া, আলাবালি,তনজেব, তরন্দাম, জামদানী। তন্মধ্যে মসলিন কাপড়ের উত্তরাধিকারী হিসেবে জামদানী শাড়ি বাঙ্গালি নারীদের অতি পরিচিত৷
বাংলার সুবেদাররা মোগল বাদশাহদের দৃষ্টি কাড়তে তাদের কাছে উপঢৌকন হিসেবে মসলিন শিল্পকেই বেছে নিতেন। জানা যায়, এমনকি সম্রাজ্ঞী নুরজাহান এই মসলিন বস্ত্রের একজন অতি অনুরগী ছিলেন। খ্রিস্টীয় বিংশ শতাব্দীরে বাংলাদেশে প্রচলিত “সোনাই বিবির” পালাতে ও মসলিনের কদর প্রত্যক্ষ করা যায়৷ যেমন –
পরথমে পাইড়াইল শাড়ি ভাইরে
শাড়ি নামে গঙ্গায় জল
নুখেতে নইলে শাড়ী
আর ও করে টলমল রে।
পানিতে ধইলে গো শাড়ি
শাড়ি পানিতে মিলায়
শুখেনায় থইলে গো শাড়ি ভাইরে
পিঁপড়ায় টাইন্যা লইয়া যাই রে।
নামকরণ
মসলিন শব্দটি এসেছে ” মসুল” থেকে। ইরাকের এক বিখ্যাত ব্যবসাকেন্দ্র হল মসুল। এই মসুলে খুবই সূক্ষ কাপড় প্রস্তুত হত। আর এই ‘ মসুল ‘ এবং ‘ সূক্ষ কাপড় ‘ এ দুইকে মুদ্রার দুই পিঠের মতো যোগসূত্র করে ইংরেজরা এর নাম দেন মসলিন। অবশ্য বাংলার ইতিহাসে “মসলিন ” বলতে বোঝানো হয় তৎকালীন ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী কিছু এলাকায় উৎপাদিত অতি সূক্ষ মিহি কাপড়কে।
মসলিন কাপড়ের স্বর্ণযুগ বা ইতিহাস
মসলিনের ইতিহাস অনেকটাই পুরনো ও দীর্ঘ। স্বরনাতীত বাংলায় এর উল্লেখ পাওয়া যায় প্রথম খ্রিস্টাব্দের প্রথম শতকেই। রোম সাম্রাজ্যের স্বর্ণযুগে অভিজাত রোমান নারীরা ঢাকার মসলিন পরিধান করে দেহ সৌন্দর্য প্রদর্শন করতে ভালোবাসতেন। একই শতকে রচিত “পেরিপ্লাস অব দ্য এরিথ্রিয়ান সি ” শীর্ষক গ্রন্থে মসলিন সম্পর্কে বিশেষ ধরণের তথ্য পাওয়া যায়। এতে মোটা ধরনের মসলিন কে মলোচিনা, প্রশস্থ ও মসৃণ মসলিনকে মোনাচি এবং সর্বোৎকৃষ্ট মসলিনকে গেঞ্জেটিক বা গঙ্গাজলী বলে উল্লেখ করা হয়েছে । নবম শতকে রচিত আরব ভৌগোলিক সোলাইমানের “সিলসিলাত তাওয়ারীখে ” ‘ রুমি ‘ নামক একটি রাজ্যের বিবরণ পাওয়া যায়৷ সেখানে এমন সূক্ষ ও মিহি সুতি বস্ত্র পাওয়া যেত যে ৪০ হাত লম্বা ও দু’হাত চওড়া এক টুকরো কাপড় আংটির ভিতর দিয়ে অনায়াসে নড়াচড়া করা যেতো। তৎকালীন এই বস্ত্র তিনি সেখানে ব্যতীত আর কোথাও দেখেন নি। আর এই “রুমি ” রাজ্যকে বাংলাদেশের সাথে অভিন্ন ধরা হয়৷ চতুর্দশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে বাংলায় আগত “মরক্কো দেশীয় পর্যটক ইবনে বতুতা ” তিনি সোনারগাঁওয়ে উৎকৃষ্ট মসলিন তৈরি হতে দেখেছেন। তিনি তা দেখে চমৎকৃত হয়ে মন্তব্য করেন – ‘এমন উন্নতমানের বস্ত্র হয়তো সারা দুনিয়ার আর কোথাও পাওয়া সম্ভব নয় ‘। পঞ্চদশ শতকে বাংলাদেশে আসা চীন লেখকেরা ও এখানকার সুতি বস্ত্রের ভূয়সী প্রশংসা করেন৷
শুধু বিদেশী পর্যটক নয়, বাংলাদেশের তৈরী মসলিনের সূক্ষতা, মিহি ও দৃষ্টিনন্দন বুননে বিষ্ময় প্রকাশ করেন ইংরেজ কোম্পানির সরকার ঐতিহাসিক ” রবার্ট ওরম”। তিনি খ্রিস্টীয় ১৭৫০ সালে বাংলাদেশে অবস্থান করার সূত্রে মসলিনের বুনন ও ঐতিহ্য প্রত্যক্ষ করতে সক্ষম হন। তিনি লিখেছেন – ‘ এমন অবিশ্বাস্য রকমের সূক্ষ কাপড় কী করে যে এখানকার মানুষ তৈরি করতে পারে, তা আমার কাছে একটি ধাঁধা ‘ । বিশেষ করে এই কারণে যে, এসব কাপড় তৈরি করতে যেসব যন্ত্রপাতি অপরিহার্য মনে হয়, তা থেকে এরা বঞ্চিত। ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ডেনিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর রিপোর্ট থেকে জানা যায় বাংলার তাঁতিরা কোন মেশিন ছাড়াই নিজেদের উদ্ভাবিত অতি সাধারণ কিছু যন্ত্রপাতি দিয়ে অত্যন্ত সুন্দর ও অতিসূক্ষ বস্ত্র তৈরী করে৷
বাংলায় মসলিনের প্রাপ্তিস্থান
গবেষকদের মতে মসলিন তৈরীর প্রাচীনতম কেন্দ্র ছিল অধুনা ভাওয়াল জঙ্গলে পরিবেষ্টিত ” কাপাসিয়া “। মধ্যযুগেই ঢাকাই মসলিন তৈরীর প্রধান উৎপাদনকেন্দ্রে পরিণত হয়। সোনারগাঁও এবং আধুনিক যুগে পদ্মা, ব্রক্ষ্মপুত্র ও মেঘনাবেষ্টিত ১৯৬০ বর্গমাইল জুড়ে উৎকৃষ্ট মসলিন তৈরী হত। এই অঞ্চলে ১৮৪১ খ্রিস্টাব্দে চার হাজার ১৬০ টি তাঁতে মসলিন প্রস্তত হত৷ ঢাকা, সোনারগাঁও, ডেমরা, তিতবন্ধী, বালিয়াপাড়া, নাপাড়া, মৈকুলি, চরপাড়া, বাশটেকি, নবীগঞ্জ, শাহপুর, ধামরাই, সিদ্বিরগঞ্জ, কাচপুর প্রভৃতি জায়গাগুলো মসলিন তৈরীর প্রধান কেন্দ্র ছিল৷
সূক্ষ সুতা বুননে তিন আঙ্গুলের জাদু
মসলিন তৈরীর জন্য প্রয়োজন হতো বিশেষ এক ধরনের সূক্ষ সুতা। “ফুটি কার্পাস ” নামক তুলা থেকে প্রস্তুত অতি চিকন সুতা দিয়ে মসলিন তৈরী করা হত। চড়কা দিয়ে কাটা, হাতে বোনা মসলিনের জন্য সর্বনিম্ন ৩০০ কাউন্টের সুতা ব্যবহার করা হত যার ফলে মসলিন দেখাত কাচের মত স্বচ্ছ। মসলিন তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় সুতা অন্য কোথাও থেকে আমদানি করা হত না। বরং বাংলাদেশের মেঘনা ও শীতলক্ষ্যা নদীতীরবর্তী এলাকায় ‘ বয়রাতি ‘,ও ‘ফুটি কার্পাস ‘ আবাদ করা হত। সেই কার্পাসের তুলা হতে ষোল থেকে ত্রিশ বছরের মেয়েরা তাদের স্পর্শকাতর আঙ্গুলের সাহায্যে মিহি সুতা তৈরী করতেন। তবে মেঘনা নদীতীরবর্তী ফুটি কার্পাসের তুলা থেকে তৈরী সুতাই ছিল উন্নতমানের মসলিন তৈরীর মূল উপকরণ৷
বয়রাতি কার্পাসের সুতায় অপেক্ষাকৃত নিকৃষ্টমানের মসলিন তৈরি হতো৷ কার্পাসের তুলা থেকে সুতা উৎপাদনের পর সুতা নাটান , টানা হোতান, সানা বাঁধা, নারদ বাঁধা, বু – বাঁধা, ইত্যাদি পর্যায় অতিক্রম করার পর মসলিন বোনা হত। কিন্তু মসলিন বোনার পর আর ও অন্তত তিনটি পর্যায় অতিক্রমের মাধ্যমে মসলিন বাজারজাত হতো। যার মধ্যে ছিল – কাপড় ধোঁয়া, সুতা সুবিন্যস্ত করা ও রিফু করা এবং ইস্তিরি, রঙ ও সূচের কাজ। পরিশেষে থাকত কাপড়ের গাঁটার বাঁধা। মজার ব্যাপার হল – মসলিন উৎপাদন ও বিপণনের জন্য প্রতিটি ধাপে আলাদা আলাদা পেশাজীবী ছিলেন। প্রতিটি পর্যায়ে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি বা পেশাজীবি কাজগুলো সম্পন্ন করতেন। তাই মসলিন তৈরী ও বিপণন ছিল মূলত একধরনের সামাজিক ও পেশাজীবীর কর্ম। যার প্রতিটি স্তরে দক্ষতার সুষম বিন্যাস ছিল।
মুঘল আমলে মসলিন
মুগল শাসনের সময় বঙ্গদেশ ছিল গোটা বিশ্বের মসলিন, সিল্ক এবং মুক্তো ব্যবসার কেন্দ্র৷ মুঘল যুগের সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তুলা উৎপাদনকেন্দ্র ছিল বঙ্গদেশ বিশেষ করে ঢাকা শহর ছিল নেতৃস্থানীয়। যার জন্য মধ্য এশিয়ায় মসলিনকে ‘ডাকা / দাকা ‘ বলা হত। তখন বঙ্গদেশ থেকে তুলো এবং সিল্কের বিভিন্ন বস্ত্র ইউরোপ, ইন্দোনেশিয়া এবং জাপানে রপ্তানি হত। এশিয়া থেকে ডাচদের আমদানিকৃত ৫০% বস্ত্র প্রায় ৮০%সিল্ক যেত বঙ্গদেশ থেকে।
ষোড়শ শতকে মসলিন
ষোড়শ শতাব্দীর প্রথম দিকে, টোমেস পাইরেস নামের একজন পর্তুগীজ ঔষধিপ্রস্তুতকারকের লেখনী অনুযায়ী বাংলার মসলিনগুলি থাইল্যান্ড ও চীনে বিক্রিত হত। মুসলিম বিশ্বের দেশগুলিতে মসলিন ছিল একটি অভিজাত বস্ত্র। এছাড়া ও সারা মধ্যপ্রাচ্যে দক্ষিন পূর্ব এশিয়াতে ও মসলিন রপ্তানি করা হত। ওসামানীয় শাসনামলের সময় ষোড়শ শতাব্দী থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যে মসলিন রপ্তানির পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। অটোমানদের মধ্যে মসলিনের পাগড়ি বিশেষ খ্যাতি লাভ করে। ষোড়শ শতাব্দীতে পর্তুগীজরা পারস্য উপসাগরের মাধ্যমে ভারতীয় উপমহাদেশের সাথে বস্ত্রশিল্পের ব্যবসা শুরু করে৷
সপ্তদশ শতকে মসলিন
সতেরো শতকের প্রথম দিকে, ব্রিটিশ ও ডাচ ব্যবসায়ী লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশের অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। একই সময়ে ইরানের আর্মেনীয় ব্যবসায়ীরা কান্দাহার ও ইস্পাহানের মধ্য দিয়ে জমির পথে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রবেশ করে৷ তারা বাংলার মসলিনসহ অন্যান্য সুতোজাত দ্রব্যসামগ্রী সিরিয়ার অলেপ্পাতে বিক্রি করতেন৷ ইস্তাম্বুল বাজারের একটি সরকারী গুদামে ১৬৪০ সালের পুরনো ২০ ধরনের মসলিন পাওয়াগেছে এবং সর্বোচ্চ মূল্য হিসেবে ১৬০০ সিলভার পেন্স ধরা ছিল। ধীরে ধীরে ব্যবসার প্রসার যত বাড়তে থাকে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো ঢাকায় তাদের নিজস্ব কারখানা প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী হয়ে উঠে। ১৬৬৩ খ্রিস্টাব্দে ডাচরা ঢাকায় তাদের কারখানা স্থাপন করে, ১৬৬৯ সালে ব্রিটিশরা এবং ১৬৮২ সালে ফ্রেঞ্চরা।
অষ্টাদশ শতকে মসলিন
অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুতে অস্টেন্ড কোম্পানি বাংলায় ব্যবসা করতে আসেন। তারা এজেন্ট এবং তাদের নিজস্ব কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বস্ত্র কেনা শুরু করে। ব্যবসায় লাভ করতে শুরু করলে কোম্পানির লোকেরা ঢাকায় বসতি স্থাপন করতে শুরু করে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৭৪৭ সালে ঢাকার বস্ত্রশিল্প পণ্য ( প্রধানত : মসলিন) এর বাণিজ্যিক মূল্য ছিল প্রাত সাড়ে আটাশ লক্ষ টাকা৷
বাংলায় মসলিনের পতন
১৭৫৭ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা জয় করে এবং ১৭৬৫ সালে ব্রিটিশ বঙ্গ প্রেসিডেন্সি প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকীকরণের সূত্রে বিদেশী পণ্য খোলার জন্য বাজারকে বাধ্য করতে শুরু করে, একই সময়ে ব্রিটেন দেশীয় পণ্য নিষিদ্ধ করতে শুরু করে এবং বিভিন্ন সুরক্ষামূলক নীতিমালা প্রণয়ন করে। দেশজ পণ্যের উপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপ করা হয়, ভারতীয় সামগ্রী ব্রিটেনে বিক্রয় প্রায় নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। কাঁচা তুলা গুলি ব্রিটিশ কারখানায় কর বা ট্যারিফ ছাড়াই আমদানি করা হয়, এবং বস্ত্র তৈরির পর চড়া শুল্কসহ সেগুলি আবার বাংলায় বিক্রি করা হতে থাকে যা তাদের বস্ত্র তৈরীতে ব্যবহার করে৷ ব্রিটিশদের অর্থনৈতিক নীতি চালানোর ফলে বাংলায় ইন্ড্রাস্ট্রিয়ালাইজেশন ঘটে । ঔপনিবেশিকতার এই করাল গ্রাস বাংলা কে এক মহা দুর্ভিক্ষের মধ্যে ঠেলে দেয় যার ফলে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী এক তৃতীয়াংশের মৃত্যু ঘটে।
১৭৮৭ থেকে ১৭৮৮ এর মধ্যে কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে আসে বঙ্গদেশে, ভয়ঙ্কর বন্যা ও তার ফলে দুর্ভিক্ষ বাংলার জনজীবনকে একেবারে বিষিয়ে তুলে। এই বিপর্যয়ের পরে দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের বেঁচে থাকার তাগিদে কৃষির দিকে ঝুঁকতে থাকে। শস্য রপ্তানির উপর ট্যাক্স প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ফলে মানুষ তুলা উৎপাদন ভুলে,চাষাবাদের দিকে ধাবিত হতে তাকে।
স্বাভাবিক ভাবে ব্রিটেন থেকে শিল্পজাত বস্ত্রপণ্য আমদানি করার কারণে মসলিন শিল্প ধীরে ধীরে পতনের দিকে এগিয়ে যায়। এর উপরে মসলিনকে পুরোপুরি শেষ করে দেওয়ার জন্য ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসক বাংলার তুলা রপ্তানির উপর ৭৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। পরিশেষে বাংলার মসলিন বাণিজ্যের পতন ঘটে।
ঢাকাই মসলিনের পুনরুদ্ধার
ঢাকাই মসলিন শেষ প্রদর্শনী হয়েছিল লন্ডনে ১৮৫০ সালে। এর ১৭০ বছর পর বাংলাদেশে আবার বোনা হল সেই ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই মসলিন কাপড়ের শাড়ী। মসলিন শিল্পের পতন হওয়ার পর ভারতে মসলিন তৈরী হত৷ কিন্তু ভারতীয় মসলিনের চাইতে ঢাকাই মসলিনের কদর ছিল বেশী। বিশেষজ্ঞদের মতে – ঢাকাই মসলিনের বিশেষত্বই আলাদা৷ বাংলার নীলচাষ দিয়েই বিশ্ব দরবারে সহজভ্য পরিচিতি এই ভূখন্ডের। তবে বর্তমানে পদ্মার রূপালী ইলিশ আর ঢাকাই জামদানী সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে এক অনন্য স্থান দিয়েছে। ঢাকাই মসলিন পুনরুদ্ধারের মধ্য দিয়ে বাংলার বস্ত্রশিল্পের অর্থনৈতিক চাকা সচল হওয়ার পাশাপাশি গ্রামীণ স্বচ্ছলতা ফিরে আসবে। মসলিন – এটা শুধু একটি কাপড়ই নয়। আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করতে বিশেষ এক ভূমিকা রেখেছে মসলিন কাপড়।
Writers Information:
Lingkon Dey
Batch -14
Fabric Engineering
Chittagong Textile Engineering College. CTEC