এমন যদি হয় আপনি আপনার পছন্দের জামাটি প্রতিদিন-ই পরিধান করতে চান, তাহলে কেমন হবে?
হ্যা, টেক্সটাইল জগতে এক বিস্ময়কর আবিস্কারের মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে নন-ওয়াসেবল ফেব্রিক। কি থাকে এই নন-ওয়াসেবল ফেব্রিকে চলুন জেনে নেওয়া যাক-
পোশাক ওয়াস করা বন্ধ করার আগে এমন পোষাক ডিজাইন করতে হবে যা প্রকৃত পক্ষে নন-ওয়াসেবল ফেব্রিক। প্রথমেই চিন্তা করতে হবে এটি যেন ময়লা এবং ঘাম প্রতিরোধী হয়। কেননা, ঘাম নিজেই পরিষ্কার একটি পদার্থ। এটি যখন পোশাকের মধ্যে শোষিত হয় তখন এটি ব্যাকটিরিয়া দ্বারা আকর্ষিত হয়। ব্যাকটেরিয়া এবং পোষাকে থাকা উপকরণের মিশ্রনের ফলেই পোষাক থেকে খারাপ গন্ধ বের হওয়া শুরু করে। তাই এমন উপাদান দিয়ে পোষাক তৈরি করতে হবে তা যেন এই ব্যাকটেরিয়া গুলো কে আকর্ষণ না করে এবং তা যেন ঘামের ফাঁদে না পড়ে।
উল এমন এক ধরনের উপকরণ যার মধ্যে বেশ কয়েকটি ভালো গুণ রয়েছে। উল প্রাকৃতিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস এবং আর্দ্রতা জাগ্রত করতে সক্ষম, যার অর্থ, ঘামের সময় দেহকে ফ্যাব্রিকের ভিতরে আটকে না রেখে ত্বক থেকে ঘাম বাতাসের মাধ্যমে শুষে নেওয়া। তবে এর অর্থ এটিও যে উলের কাপড়গুলি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। যখন এটি গরম থাকে, তখন ঘামের বাষ্পীভবন দেহকে শীতলতা এনে দেয়।
তবে শীতকালে এটি ঠিক বিপরীত ভাবে কাজ করে। শীতকালে আমরা যখন উলের পোষাক পরিধান করে থাকি তখন তা শরীরের তাপ আটকে রাখে এবং এটি শরীরকে গরম অনুভত করায় যা শরীরে নিরোধক স্তর হিসেবে কাজ করে থাকে।
অবশ্যই, পোশাকের ফাইবার হিসাবে উলের ব্যবহারিতা বহু সংস্কৃতি জুড়ে বহু শতাব্দী ধরে পরিচিত। অতি সম্প্রতি, প্যাটাগনিয়া এবং আইসব্রেকারের মতো ব্র্যান্ডগুলি তাপমাত্রা-নিয়ন্ত্রণ করে এমন পোষাক এবং ফ্লানেল শার্টগুলি তৈরি করতে উল ব্যবহার করেছে যা ভ্রমণে বা ক্যাম্পিং এর ক্ষেত্রে পরিষ্কার থাকে। স্নিকার ব্র্যান্ড অলবার্ডস উলের জুতো তৈরি করছে যা মোজা ছাড়াই পরা যেতে পারে এবং পা থেকে কোনো ধরনের গন্ধ আসবে না।
পোষাক কম ধোয়া মূলত এটি পরিবেশের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আনবাউন্ড মেরিনোর জন্য, একটি সফল কৌশল হলো ভ্রমন পিপাসু গ্রাহকদের পোষাক নির্বাচন করা। ভ্রমণের সময় যখন একের অধিক পোশাক খুজতে হয় তখন তা সমাধানের জন্যে ব্র্যান্ডটি প্রথম একটি ইন্ডিগোগো প্রচারণা শুরু করে যা গ্রাহকদের আশ্বস্ত করেছিল যে তারা কেবলমাত্র একটি ব্যাকপ্যাক নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ভ্রমণ করতে পারে। উলের পরিধানকৃত টি-শার্ট, অন্তর্বাস এবং মোজা এসময় সতেজ থাকবে। ভ্রমনের রাস্তায় কাপড় ধুয়ে পরিস্কার করে পড়া একটি অসুবিধার কারণ ও বটে, তবে এই নন-ওয়াসেবল ফেব্রিক এই ঝামেলা থেকে রেহাই দিবে।
পোষাকের গুণগত মান ঠিক রেখে পোষাকটি যত কম ধুয়ে পরিধান করা যায় তা নিয়েই কাজ করছে ডিজাইনাররা এবং তার সুফল ইতোমধ্যেই আমরা পেতে চলেছি। এছাড়াও পোষাকে থাকা লেভেল অনু্যায়ী যদি আমরা পোষাক ধুয়ে পরিধান করি তাহলে আমরা এক পোষাক অনেকদিন পড়তে পারবো।
কন্টেন্ট রাইটার-
মোঃ ফাহিম হোসাইন
ডিপার্টমেন্ট অফ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি