রাজা বলেন মন্ত্রী কই, মন্ত্রী ছিল ঘুমে
পরদিন এল নয়া মন্ত্রী, চাকরি গেল চুকে।
টেক্সটাইল প্রিন্টিং এর ইতিহাস যেন রম্যের একখানি লাইনের মতোন বড়ই পরিবর্তনশীল। শুরু হয়েছিল যে ইতিহাস রঙের আবিষ্কারে, তাই আজ শোভিত যেন ফেব্রিকের শেডে।
টেক্সটাইল প্রিন্টিং এর বাংলা ভাবার্থ হলো চাপ দেয়া। কারন প্রিন্টিং যখন চালু হয় তখন টেক্সটাইল প্রিন্টিং বলতেই “Woodblock printing” বোঝানো হতো। কালের পরিক্রমায় হয়তো এই প্রিন্টিং এর ব্যবহার কমেছে, তবে তার নাম এর উৎপত্তি আজও বিদ্যমান। প্রিন্টিং বলতে ফেব্রিক এর মধ্যে একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্ন বা ডিজাইন অনুসারে রং করা বুঝায়।
টেক্সটাইল প্রিন্টিং এর সুচনালগ্ন ঘটে পশ্চিম এশিয়ার দেশ চীনে। কারন, সেখানকার মানুষ কাপড়ে বিভিন্ন ছবি, নকশা বানাতে পছন্দ করতেন। ফলস্রুতিতে, তাদের এ চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে কাপড়ের উপর নকশার ছাপ দেয়া হতো।
পরবর্তীতে ইউরোপে যখন শিল্প বিপ্লব শুরু হয় তখন বাহারি রঙ্গিন পোষাক এর চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। ঠিক তখনই পোষাকে ডাই(dye) এর ব্যবহার শুরু হয় এবং সেই সাথে উডব্লক প্রিন্টিং আবারো যেন মাথাচারা দিয়ে উঠে ইউরোপিয়ান কলোনিতে।
পরবর্তীতে ব্রিটিশদের বঙ্গদেশে আগমন যেন প্রিন্টিং কে নতুন মাত্রা দেয়। তারা ডাইং, প্রিন্টিং এ নীলের ব্যবহার শুরু করেন এবং নীল-করদের অত্যাচারের কাহিনী তো কারো অজানা নয়। উল্লেখ্য যে, প্রথম dye house-ও চালু হয় ব্রিটেনে।
ব্রিটিশদের আগমন এ দেশে প্রিন্টিং এর নতুন যুগের সূচনা করে। সম্ভ্রান্ত পরিবারের লোকদের কাপড়ে শোভা পেতে থাকে হরেক রকমের প্রিন্টিং এর কাপড়। তাঁত, জামদানী এমনকি মসলিনেও যেন প্রিন্টিং এর ছাপ ছেড়ে যেত।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল যুগের স্বর্ণযুগে প্রবেশের পুর্বে বৃদ্ধি পায় প্রিন্টিং এর চাহিদা। শুরুতে স্ক্রিন প্রিন্টিং এর মাধ্যমে শুরু হলেও ক্রেতারদের চাহিদা এবং গুনগত মান বজায় রাখতে অল ওভার প্রিন্টিং এর যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ, যার কর্নধার ছিল বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান।
তবে ইদানিং সময়ে চাহিদা বাড়ায় উচ্চতর প্রিন্ট কোয়ালিটি এবং কেমিক্যালের ব্যবহার কমাতে অল অভার ডিজিটাল প্রিন্টিং এর ব্যবহার শুরু হয়েছে, যেখানে স্ক্রিন অত্যাবশ্যকীয় না এবং বেশিরভাগ ডিজাইনই photoshop based হয়ে উঠেছে।
বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় ডাইং, ফেব্রিক কোম্পানীগুলো ডিজিটাল প্রিন্টিং এর ব্যবহার এর দিকে ঝুঁকছে যা আমাদের টেক্সটাইল প্রিন্টিং-কে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
সর্বশেষ সেসব প্রিন্টিং সেকশনে কর্মরত সকল ডিজাইনার এবং কর্মকর্তাদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ভর করে দেশের প্রিন্টিং সেকশন তথা টেক্সটাইল সেক্টর দাঁড়িয়ে আছে।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া, ইউটিউব।
লেখক পরিচিতিঃ
অপুর্ব মন্ডল
টিইএস টিম ডমটেক,
২য় ব্যাচ, এপ্যারেল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পীরগঞ্জ, রংপুর।