ক্যম্পাস পরিচিতি ও অবস্থানঃ
“Made in Bangladesh” ট্যাগ টিকে বিশ্বদরবারে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এবং বাংলাদেশের টেক্সটাইল সেক্টরকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকার ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ যা দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভাগীয় শহর রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা থেকে ১৯ কিঃমিঃ পশ্চিমে এবং দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা থেকে ১৮ কিঃমিঃ পূর্বদিকে খরস্রোতা করোতায়া নদীর কোল ঘেষে অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক পরিবেশে আধুনিক স্ট্রাকচার ফলো করে তৈরিকৃত সুসজ্জিত বিশালাকার ভবন,ল্যাব এবং অন্যান্য স্থাপনা নিয়ে প্রায় ১১ একর জায়গার উপর মাথা উঁচু করে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে।
বাংলাদেশের বস্ত্র সম্পর্কিত শিক্ষার অন্যতম এই বিদ্যাপীঠটি বিশিষ্ট পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার স্মরণে বাংলাদেশ আর্মির তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করা হয়। ২০১৮ সালের পহেলা নভেম্বর কলেজটির শুভ উদ্ভোদন করেন পীরগঞ্জের পুত্রবধূ বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সংক্ষেপে (ডমটেক) পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে বস্ত্র অধিদপ্তর পরিচালিত বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৮টি সরকারি কলেজের মধ্যে একটি যা চার বছর মেয়াদী বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী দিয়ে থাকে। বলে রাখা ভালো কলেজটি সম্পূর্ণ সিসি ক্যামেরার আওতাধীন সম্পূর্ণ রাজনীতি মুক্ত এবং কলেজটি প্রতিষ্ঠার খুব অল্প কিছুদিন এর মধ্যেই সবার সুনজর কেড়েছে।বর্তমানে কলেজটিতে ৩টি ব্যাচের ৩৬০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।
ভর্তি প্রক্রিয়া:
বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এস এস সি ও এইচ এস সি পরীক্ষায় প্রাপ্ত গ্রেড পয়েন্ট ও এইচ এস সি পরীক্ষায় বিষয়ভিত্তিক কাঙ্খিত নম্বর থাকা সাপেক্ষে শিক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষার জন্যে প্রাথমিক ভাবে বাছাই করা হয়। অতঃপর ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার মাধ্যমে ১২০ জন শিক্ষার্থী ৪টি ডিপার্টমেন্টে ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকে।
বিভাগসমূহ ও আসনসংখ্যা :
i) Yarn Engineering(YE) || 30
ii) Fabric Engineering(FE) || 30
iii) Apparel Engineering(AE) || 30
iv) Wet Process Engineering(WPE) || 30
বলে রাখা ভালো মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ষাট শতাংশ তাদের শিক্ষাবর্ষে মেধার ভিত্তিতে উপবৃত্তি পেয়ে থাকে।
ল্যাব সমূহ :
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বিদ্যাপীঠটির ল্যাবরেটরি গুলো সুসজ্জিত রয়েছে কোরিয়া,জাপান,চায়না এবং জার্মানি সহ উন্নত দেশ থেকে আনা সর্বাধুনিক প্রযুক্তির আন্তর্জাতিক মানের মেশিনারিজ দিয়ে যা একজন শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যৎ দক্ষ বস্ত্র-প্রকৌশলী হিসেবে গড়ে তুলতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। বলে রাখা ভালো ল্যাব গুলোতে থাকা মেশিনারিজ গুলো দক্ষ অপারেটর দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে।
ফিজিক্স ল্যাব: ফিজিক্স ল্যাবটি ক্যালরিমিটার, দূরবীক্ষণ যন্ত্র, প্রিজম, স্ফেরোমিটার, স্ক্র গজ, রোধ বাক্স, গালভানোমিটার, মিটার স্কেল সহ আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সুসজ্জিত।
কেমিস্ট্রি ল্যাব: কেমিস্ট্রি ল্যাবটি বিভিন্ন রাসায়নিক উপকরণ, বার্নার, টেস্টটিউব, মেজারিং স্কেল, পিপেট, বুরেট, ফানেল সহ প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ দিয়ে সুসজ্জিত।
গার্মেন্টস ল্যাব: কাটিং, সুইং এবং ফিনিশিং করার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি দিয়ে সু-সজ্জিত।
কম্পিউটার ল্যাব: কম্পিউটার ল্যাবটি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত এবং সেখানে প্রায় ৬০টির মত কম্পিউটার রয়েছে।
কোয়ালিটি কন্ট্রোল এবং টেস্টিং ল্যাব: ফাইবার কোয়ালিটি , রঙের দৃঢ়তা , ফ্যাব্রিক ইন্সপেকশনের কাজে ব্যবহৃরিত সরঞ্জাম দ্বারা সজ্জিত এই ল্যাব টি।
উইভিং ল্যাব: পাওয়ার লুম, হ্যান্ড লুম, অটোমেটেড লুম সহ আধুনিক সব যন্ত্রপাতি রয়েছে এই ল্যাব টিতে।
নিটিং ল্যাব: এ ল্যাব টিতে রয়েছে নীট ফেব্রিক তৈরিতে ব্যবহৃত ফ্ল্যাট নিটিং মেশিন এবং ভি-বেড মেশিন।
ইয়ার্ন ম্যানুফ্যাকচারিং ল্যাব: এ ল্যাব টিতে রয়েছে কার্ডিং মেশিন , ব্লো রুম মেশিন , কম্বিং মেশিন সহ বিভিন্ন ইয়ার্ন টেস্টিং মেশিন।
ফ্যাশন ডিজাইন ল্যাব: ডামি, সুইং মেশিন, সহ সরঞ্জাম দ্বারা সজ্জিত এই ল্যাব টি।
ওয়েট প্রসেসিং ল্যাব: ওয়াশিং মেশিন, প্লেট সিনজিং মেশিন, রোলার সিনজিং মেশিন, গেস সিনজিং মেশিন সহ অত্যাধুনিক সব মেশিন দ্বারা বেষ্টিত এই ল্যাব টি।
এ ছাড়াও রয়েছে মেকানিক্যাল ল্যাব, এপারেল ল্যাব, জুট স্পিনিং ল্যাব, কটন স্পিনিং ল্যাব,
ইঞ্জিনিয়ারিং ড্র্যয়িং ল্যাব।
ছবিতেঃ করতোয়া নদীর পার থেকে প্রাণের ক্যাম্পাস।
ডমটেকের বিশেষ স্থানসমূহ :
অডিটোরিয়াম : অডিটোরিয়াম মূলত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মিটিং,সেমিনার,কর্মশালা কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ডমটেক শহীদমিনারঃ এখানে অবসরে কিংবা একাকিত্ব কাটিয়ে নিরিবিলি বসতে দেখা যায় অনেককেই এছাড়া শহীদ মিনারের সাথে জড়িয়ে আছে শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা,একাত্মতা এবং ভালোবাসা।
ক্যান্টিন : ক্যান্টিন ডমটেকিয়ানরা সকাল বিকাল নাস্তার সাথে চা খেতে খেতে আড্ডা দেওয়ার অন্যতম প্রিয় জায়গা।
ঘাট-পাড়ঃ ক্যম্পাসের মাঠটির পাশেই ডমটেকের ছোট্ট সুন্দর সুইমিংপুল টির অবস্থান এবং ঘাট-পাড়টি শিড়ি দিয়ে সুন্দর করে বাধা যেটি শিক্ষার্থীদের কাছে সন্ধার পরে, বিকেলে আড্ডা কিংবা নিরিবিলি বসে থাকার জন্য অন্যতম একটি জায়গা।
ওয়াজেদ মিয়া সেতু: শিক্ষার্থীদের জন্য আড্ডার অন্যতম স্থান কলেজ এর পাশের করতোয়া নদীর উপর দিয়ে বয়ে চলা ৩০৩ মিটার দৈর্ঘ্যের ওয়াজেদ মিয়া সেতু যেখানে চাইলেই বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মেতে ওঠা যায়।
নদীর পার : এটি ক্যাম্পাসের অংশ না হলেও ক্যাম্পাসের সকাল সন্ধ্যা ডমটেকিয়ানদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য আড্ডাখানা যেখানে চাইলেই আপনি বাদাম খেতে খেতে শরৎকালে এর সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারেন কিংবা নৌকায় করে খানিকটা প্রকৃতি বিলাস করতে পারেন।
প্রাণের এই বিদ্যাপীঠটি দাঁড়িয়ে আছে সু-উচ্চ বিশাল ভবন ও স্থাপনা সমূহ নিয়ে যা গড়ে উঠেছে আধুনিক মডেল ও স্টাইলের আদৌলে। ভবন ও স্থাপনা গুলো হলো:
১.একাডেমিক ভবন ও প্রশাসনিক ভবন
২.অডিটোরিয়াম
৩.লাইব্রেরী
৪.অধ্যক্ষের বাস ভবন
৫.অফিসার্স ডরমিটরি ২ টি
৬.টিচার্স কোয়ার্টার
৭.স্টাফ কোয়ার্টার
৮.পাওয়ার প্ল্যান্ট
৯.স্পিনিং শেড
১০.ডাইং শেড
১১.মসজিদ
১২.উইভিং শেড
১৩.ছাত্র হল ৬ তলা
১৪.ছাত্রী হল ৬ তলা
১৫.শহীদ মিনার
১৬.ফুটবল খেলার মাঠ
১৭. বাস্কেটবল খেলার মাঠ
১৮.সুইমিং পুল
১৯.ভাস্কর্য
২০.জিমনেশিয়াম
এছাড়াও লিখাপড়ার পাশাপাশি নিজেকে এক্সট্রাকারিকুলার এক্টিভিটিস এর সাথেও চাইলেই নিজেকে যুক্ত করতে পারবেন বিভিন্ন ক্লাব ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এ কাজ করে। ইতোমধ্যেই নিচে উল্লেখিত ক্লাব ও সংগঠন গুলো তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।
১.রংতুলি- ডমটেক সাংস্কৃতিক ক্লাব
২.মুহূর্ত- ডমটেক ফটোগ্রাফিক ক্লাব
৩.শীতলছায়া- ডমটেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
৪.ডমটেক দ্বীনি সার্কেল।
৫.অক্ষর- ডমটেক রাইটার্স সোসাইটি।
৬.ডমটেক ডিবেটিং ক্লাব
৭.ডমটেক স্পোর্টস ক্লাব
৮.ডমটেক ক্যারিয়ার ক্লাব
৯.ডমটেক ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ক্লাব
১০.টেক্সটাইল রিসার্চ ক্লাব
বর্তমানে টেক্সটাইল সেক্টর বাংলাদেশের একটি প্রধান এবং দ্রুত বর্ধনশীল খাত যা সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সবচাইতে বেশি অবদান রেখে চলেছে তাইতো প্রাণের এই বিদ্যাপীঠটি চতুর্থ শিল্পবিপ্লব কে সামনে রেখে এবং দক্ষ বস্ত্রপ্রকৌশলী গড়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং শিক্ষকমন্ডলী প্রতিনিয়ত নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এবং ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে বাস্তবিক ধারণা দেওয়ার লক্ষে প্রতি সেমিস্টারে ক্যম্পাস থেকে দেশের বিভিন্ন সনামধন্য ইন্ডাস্ট্রি গুলোতে ইন্ডাস্ট্রি টুর এর আয়োজন করে থাকেন।
অর্থাৎ নিজেকে একজন দক্ষ বস্ত্রপ্রকৌশলী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হতে একটি অনন্য এবং নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান।
WRITER INFORMATION
ARAFAT KHAN PRITOM
Campus Ambassador
Dr.M A Wazed Miah Textile Engineering College.
—
Sincerely,
Arafat Khan Pritomphone: 01312678164
Email: [email protected]