Friday, October 25, 2024
Magazine
More
    HomeBTMA, BGMEA & BKMEAপাট থেকে তৈরী পরিবেশবান্ধব সোনালী ব্যাগ- আমাদের গর্ব, আমাদের ভবিষ্যৎ

    পাট থেকে তৈরী পরিবেশবান্ধব সোনালী ব্যাগ- আমাদের গর্ব, আমাদের ভবিষ্যৎ

    সোনালী ব্যাগ কী?
    সোনালী ব্যাগ হলো পাট থেকে উদ্ভাবিত এক ধরনের পলিথিন ব্যাগ। পাটের তৈরী পলিথিন বা সোনালি ব্যাগ একটি সেলুলোজভিত্তিক বায়োডিগ্রেডেবল বায়োপ্লাস্টিক, যা প্লাস্টিক ব্যাগের একটি বিকল্প।
    বাংলাদেশের বিজ্ঞানী ড. মোবারক আহমদ খান সোনালী ব্যাগ এর উদ্ভাবক।

    পাটের সেলুলোজ টিকে কনভার্ট করে ওয়াটার সলুবল সেলুলোজ করা হয়ে থাকে। সলুশনটিকে একটি বাইন্ডারে রেখে ক্রস লিংক করা, কালার করা সব একত্রে মিক্স করে রিঅ্যাকশন ট্যাংকে দেওয়া হয়। রিঅ্যাকশন ট্যাংকিতে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা, প্রেসার এবং টাইম মেইনটেইন করতে হয়। এটি কমপ্লিট হলে ড্রাই করে ড্রাইয়ার মেশিনে প্রোভাইট করলে কনভেয়ার বেল্টের একদিক দিয়ে সলুশন যায় অন্য দিক দিয়ে ফিল্মটা বের হয়। এই ফিল্ম বা শিট থেকেই সোনালী ব্যাগ তৈরি হয়ে থাকে।

    সোনালী ব্যাগ কেনো প্রয়োজন?
    পরিবেশ দূষণের এক বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে পলিথিনের ব্যাবহার। এটি মাটির স্বাভাবিক উর্বরতা নষ্ট করে, জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে। পলিথিনের মাত্র ১ শতাংশ রিসাইকল করা হয়, এই প্রক্রিয়ার ব্যাবহিত কেমিক্যাল থেকে ক্যানসার, চর্মরোগ, লিভার, কিডনির ক্ষতি সহ জটিল রোগের সৃষ্টি হয়ে থাকে। পলিথিন ব্যাগ তৈরি করতে প্রতি বছর পৃথিবীজুড়ে মোট খনিজ তেলের ৪% ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
    পলিথিনের বিকল্প হিসাবে এই বায়োডিগ্রেডেবল বায়োপ্লাস্টিক বা সোনালী ব্যাগ অধিক কার্যকরী। এটি পচনশীল, খুব সহজেই মাটি বা পানির সাথে মিশে পঁচে যায় এবং মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। এই ব্যাগ তৈরীতে ব্যাবহিত কেমিক্যাল পরিবেশ বান্ধব, এখানে ৯০% উপাদানই পাটের সেলুলোজ থেকে নেওয়া হয় বাকি ১০% যেই কেমিক্যাল ব্যাবহিত হয় সেগুলো পরিবেশের ক্ষতি করে নাহ। এই ব্যাগ তৈরীতে ব্যাবহিত মেশিনগুলো বাংলাদেশের উৎপাদিত স্বল্প সংখ্যক মেশিন চায়না থেকে আমদানি কৃত। এই ব্যাগ সাধারণ পলিথিনের ব্যাগ থেকে দেড়গুণ বেশি চাপ নিতে পারে।
    পরিবেশ রক্ষার্থে এবং বিশ্ববাসীকে দূষণ মুক্ত রাখতে পলিথিনের বিকল্প হিসাবে সোনালি ব্যাগই কার্যকর।

    সোনালী ব্যাগের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা –
    ২০১৭ সালে বিজেএমসি নিয়ন্ত্রণাধীন লতিফ বাওয়ানী জুট মিলস লি. এর অভ্যন্তরে সোনালী ব্যাগ তৈরিতে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। দেশের উপাদান দিয়ে উদ্ভাবন করা এই সোনালি ব্যাগ এই ৮ বছরেও বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসতে পারিনি। তবে এটি উদ্ভাবনের পর গত পাঁচ বছরে ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, কোরিয়ান বায়োডিগ্রেডেবল ব্যাগের (বায়োপলি) আন্তর্জাতিক বাজার বিভিন্ন কোম্পানি দখল করে ফেলেছে।
    বাংলাদেশ তাদের এই পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন করতে অধিক সময় ব্যাবহার করায় বিশ্ববাজারের মার্কেট থেকে পিছিয়ে পরেছে। তবে সরকারি প্রণোদনা এবং প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর সহযোগিতায় এই প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন করতে পারলে এটি বাংলাদেশের জন্য মাইলফলক তৈরী করতে সক্ষম হবে।

    এই ব্যাগ বাজারজাতকরনের সময় কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করে মার্কেটে আনতে হবে বিশেষভাবে
    ১. মূল্যের দিকে খেয়াল রাখতে হবে
    ২. ম্যানুফ্যাকচারিং প্রযুক্তির উৎকর্ষতা বৃদ্ধি
    ৩. ডি কম্পোস্ট সার্টিফিকেশন, পরিবেশগত সনদ থাকতে হবে।
    ৪. কাস্টমার চাহিদা বিবেচনা করতে হবে
    ৫. বায়োপলির গৃহস্থালি ও শিল্প ব্যবহার বিবেচনায় নিয়ে আকর্ষণীয় পণ্য ডিজাইন করতে হবে।
    বাংলাদেশের পাটের উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা আগের তুলনায় অনেক হ্রাস পেয়েছ। যথোপযুক্ত পরিকল্পনা ব্যাবহিত হলে, পাটের স্বর্ণযুগ ফেরাতে অবদান রাখবে এই সোনালী ব্যাগ।
    Reference link: https://mubarakahmadkhan.org/sonali%20bag.html


    Writer Information:-
    Ehsanul Islam Hasan
    Executive- Creative Department
    Textile Engineers Society
    Dept.of Textile Engineering, NITER

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Related News

    - Advertisment -

    Most Viewed