জীবিকা নির্বাহের জন্য সকালে ঘুম থেকে উঠা থেকে শুরু করে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত চলে ছুটে চলা। নিজেদের জীবিকা নির্বাহ আর দেশের উন্নয়ন যেন কয়েকগুচ্ছ শিউলি ফুল,যা পরষ্পরের সাথে একটা ফুলের মালা তৈরী করে,যা সকলকে আর্কষন করে,তেমনি দেশের অর্থনীতির চাকা কে অগ্রসর করে,যা পুরো বিশ্বে বাংলাদেশ নামটিকে স্বর্নাক্ষরে লিপিবদ্ধ করে। আর এই অগ্রযাত্রা আর ও এক ধাপ এগিয়ে যাবে বিটকয়েন এর হাত ধরে।
বিটকয়েন হচ্ছে একটি ব্লক বা মুদ্রা। প্রচলিত মুদ্রা র মতোই একটি মুদ্রা কিন্তু প্রযুক্তিনির্ভর। টাকা বা মুদ্রাই হলো অর্থনীতির শক্তি। পৃথিবীতে যখন টাকার প্রথা প্রচলন ছিল না তখন ছিল বিনিময় প্রথা। কিন্তু জটিলতা দেখা দেওয়ার কারনে তা রুপ নেয় কড়ি বা পাখির পালক বা মাছের দাত। পরবর্তিতে সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের হাত ধরে মুদ্রার প্রচলন যা পরবর্তীতে বর্তমানে টাকা হিসেবে আখ্যায়িত। বিটকয়েন হচ্ছে একটি ডিজিটাল ডাটা দিয়ে তৈরি ছোট ছোট ব্লকের ভান্ডার। এটি সার্বজনীন এবং ব্লক চেইন ব্যবহারকারী যে কেউ তা দেখতে পারবে।
বিটকয়েনর জনক বলে Satashi Nakamoto কে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যার প্রথমপ্রচলন দেখা যায় ২০০৯ সালে। বর্তমান এ ১.৫ কোটির ও বেশি মুদ্রা রয়েছে এবং যা দিয়ে প্রতিদিন ৫ কোটি ডলার ও বেশি অর্থ লেনদেন করা হচ্ছে। যা বর্তমানে পুরো বিশ্বের কাছে সম্ভাবনার এক দ্বার খুলে দিয়েছে। বিভিন্ন দেশে এই কার্যক্রম শুরু হয়ে গেলেও বাংলাদেশ এখন ও তা থেকে পিছিয়ে। ২০১২ সালে সংঘটিত NHS Cyber attack এর কথা তো আমরা সবাই জানি যা পুরো বিশ্ব কে অস্থির করে তুলেছিল এবং তা থেকে বোঝা যায় যে বিটকয়েন এই ব্যাপারটা কতটা সুরক্ষিত। উদাহরনস্বরূপ: একজন ব্যাক্তিকে টাকা পাঠানোর জন্য সাহায্য নিতে হয় ব্যাংক বা অন্য কোন মাধ্যমের যা অপর ব্যাক্তিকে টাকা পৌছে দিবে ঠিকই কিন্তু নির্দিষ্ট পরিমাণ মুনাফা তাকে দিতে হবে, কিন্তু যখন অর্থের পরিমাণ বেশি হয়ে থাকে তার জন্য তখন অধিকমুনাফা ব্যায় করতে হয়। যা এক ধরনের প্রতিবন্ধকতা।
তাই পোশাকশিল্পে এই প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের দেশের অর্থনীতির চাকাকে আর ও দুই ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। কারন বিটকয়েন এর ব্যবহার হয়ে থাকে গ্রাহক থেকে গ্রাহকে। এখানে সংযুক্ত সকল ব্যাক্তি অবগত থাকবে যে কি পরিমান অর্থ লেনদেন হচ্ছে এবং এর জন্য তৃতীয় কোন প্রতিষ্ঠান বা মাধ্যম কে মুনাফা প্রদান করতে হয় না। এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে হ্যাকার যদি হ্যাক করে? এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন বিষয়টি হচ্ছে প্রত্যেকটা ব্লকে থাকে ট্যাগ। হ্যাকার একটা ডিভাইস হ্যাক করলে তা সম্পূর্ণ নিজের আয়ত্বে আনা অসম্ভব ।আর এ জন্য সর্বোচ্চ সময় পাবে ১০ মিনিট। একটা ডিভাইসের একটা ট্যাগ হ্যাক করলেও অন্য ডিভাইসের অনুমতি ব্যতীত সে তথ্য চুরি করতে পারবে না। কারণ তার জন্য সকল ডিভাইসের ট্যাগ সাদৃশ্য হতে হবে। যা এতো অল্প সময়ে অসম্ভব।
পোশাকশিল্পে কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়। এর মাধ্যমে পুরো কার্যক্রম টা সকলের কাছে অবগত থাকবে যা দুর্নীতির মাত্রা ও কাজের অগ্রযাত্রা কে আরও পরিস্ফুটিত করবে। আর এই বিট-কয়েনের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন করাকেই বলা হয় ব্লকচেইন মেথড। আর এই ব্লকচেইন মেথড পোশাক সরবরাহে, সাপ্লাই চেইনের প্রত্যেকটি অপারেশনকেই আরো ত্বরান্বিত করবে। এটি প্রতিটি পোশাকের সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা এবং সন্ধানের প্রস্তাব দিতে সক্ষম। আর এই ব্লকচেইন মেথড বাজার থেকে জাল পণ্যের ব্যবহার কমিয়ে দিবে। দীর্ঘমেয়াদে, এই প্রযুক্তিটি পোশাক শিল্পকেও টেকসই করবে। উৎপাদনকারী এবং গার্মেন্টস বাঁচাতে পোশাক শিল্পের দ্বারা এই প্রযুক্তিটি গ্রহণ করতে এখনও সময় লাগবে। যা আমাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।
লেখকঃ
Name: Sree Joy kumar Devnath
Batch: 9th
Institute: NITER