Cashmere Wool বা কাশ্মির উল,সাধারণত কাশ্মির নামে পরিচিত,এটি একটি ফাইবার যা কাশ্মির ছাগল,পাশমিনা ছাগল এবং ছাগলের অন্যান্য কিছু জাতের থেকে প্রাপ্ত পশম দিয়ে উৎপাদিত হয়।এই ফাইবার কয়েকশো বছর ধরে সূতা,টেক্সটাইল এবং পোশাক তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। কাশ্মির(Cashmere Wool) আবার কাশ্মীর শাল (Kashmir Shawl) এর সাথে প্রায় নিবিড় ভাবে জড়িত। উনিশ শতকে যখন কলোনিয়াল (Colonial) উপনিবেশিক ভারত থেকে কাশ্মীরের শাল ইউরোপে পৌঁছেছিল তখন “কাশ্মির” শব্দটি কাশ্মীরের একটা ক্ষোভ অর্থ বুঝায় এরকম একটি শব্দ থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। সাধারণত এই ফাইবারকে উল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।এই ফাইবারটি সুক্ষ্ম,শক্তিশালী,হালকা,নরম এবং ভেড়ার পশমের চেয়ে প্রায় তিনগুন বেশি অন্তরক বিশিষ্ট হয়।নরম আন্ডারকোট এবং গার্ডের চুল উভয়ই ব্যবহার করা হয়।টেক্সটাইল এর জন্য নরম চুল গুলো সংরক্ষণ করা হয় এবং মোটা গার্ড চুলগুলো ব্রাশ তৈরি বা অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা হয়।বেশ কয়েকটি দেশ বছরের পর বছর ধরে কাশ্মির তৈরি করে আসছে এবং দিনে দিনে প্রক্রিয়াকরনের কৌশলগুলোর উন্নতি করে চলছে।২০১৯ সালের হিসেবে চীন ও মঙ্গোলিয়া শীর্ষস্থানীয় দুটি উৎপাদক দেশ।
পোশাক তৈরি এবং অন্যান্য টেক্সটাইল পণ্য উৎপাদন করার জন্য কাশ্মির উল ফাইবার (Cashmere Wool Fiber) কাশ্মির ছাগল এবং এরকম কিছু জাতের ছাগলের পশম থেকে উৎপাদন করা হয়। ঐতিহাসিকভাবে সুক্ষ্ম, সুন্দর পশমযুক্ত কাশ্মির ছাগলকে “Capra hircus langier” নামেও ডাকা হয় এবং এই ছাগল গৃহপালিত ছাগল “Capra hircus” এর উপপ্রজাতি। ডি-হেয়ারিং(De-Hairing) এই যান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মোটা চুল ও সুক্ষ্ম চুল গুলো আলাদা করা হয়।সুক্ষ্ম চুল গুলো পোশাক জাতীয় পণ্য উৎপাদনে ব্যবহার করা হয় এবং মোটা চুল ব্রাশ বা অন্যান্য পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।
বসন্তের শুরুতে যখন শীত চলে যায় তখন কাশ্মির ছাগল গুলোর পশম প্রাকৃতিক ভাবে পড়ে যায়।ঠিক ওই সময়েই ছাগলের শরীর থেকে পশমগুলো সংগ্রহ করে নেয়া হয়।তারপর ফাইবার উৎপাদন করা হয়। পরিষ্কার করা হয় এবং অতিরিক্ত ময়লা,চুল গুলো আলাদা করা হয়।ইরান,আফগানিস্তান,নিউজিল্যান্ড,অস্ট্রেলিয়ায় তারা মূলত প্রানীর পশম থেকে ফাইবার উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভেড়ার পশমই পেয়ে থাকে বেশি,সেক্ষেত্রে পশমের পরিমান বেশি হলেও খাঁটি কাশ্মিরের ফলন কম হয়।আমেরিকাতে সব থেকে জনপ্রিয় পদ্ধতিটির নাম হলো “Combing”।এই পদ্ধতিটি ২ সপ্তাহেরও বেশি সময় নেয়।এই প্রক্রিয়ায় খুবই দক্ষ চোখ দ্বারা ফাইবারকে ১ সপ্তাহ পরিক্ষা করা হয়।
সারাবিশ্ব জুড়ে কাঁচা কাশ্মির (Raw Cashmere) এর বৃহত্তম উৎপাদক হচ্ছে চীন।২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী তারা প্রতিবছর ১৯,২০০ মেট্রিক টন কাশ্মির উৎপাদন করে আসছে।২০১৬ সালের হিসাবে মঙ্গোলিয়ায় উৎপাদন হয়েছে ৮,৯০০ টন।তবে কম পরিমাণ উৎপাদন হলেও একইসাথে পাল্লা দিয়ে যাচ্ছে আফগানিস্তান,ইরান,তুরষ্ক,কিরগিজস্তান এবং অন্যান্য মধ্য এশীয় প্রজাতন্ত্র দেশগুলো।ধারনা করা হয় ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টন পশম সংগ্রহ করা হলে, তার থেকে যদি পশুর চর্বি,ময়লা এবং মোটা চুলগুলো আলাদা করা হয় বা সরিয়ে ফেলা হয় তাহলে সেখান থেকে ৬,৫০০ টন খাঁটি কাশ্মির পাওয়া যায়।গড়ে প্রতিটি ছাগল থেকে প্রতি বছর ১৫০ গ্রাম উৎপাদন হয়ে থাকে।খাঁটি কাশ্মিরে রঙ করা হয় এবং কাটা হয় এবং সেখান থেকে সোয়েটার,টুপি,গ্লাভস,মোজা,জ্যাকেট,পায়জামা,কম্বল ইত্যাদি তৈরি করা হয়।স্কটল্যান্ড,ইটালি এবং জাপানের ফেব্রিক এবং গার্মেন্ট উৎপাদনকারীরা কাশ্মির এর ব্যবহৃত পণ্য উৎপাদন করে পুরো বিশ্ব বাজারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে।কাশ্মির এর তৈরি পোশাক জাতীয় পণ্যগুলোর উচ্চমূল্য হ্রাস করার জন্য অন্যান্য ফাইবারের সাথে মিশ্রিত করে বাজারজাত করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া
লেখক:
মোহাম্মদ আরশিল আজীম
Batch: 201
Department of Textile Engineering
BGMEA University of Fashion & Technology(BUFT)