মোঃমামুন হক,নিজস্ব প্রতিবেদক।
প্রায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন রাজ্যের একটি আকাঙ্ক্ষাপূর্ণ স্বপ্নের নাম বিসিএস ক্যাডার।একজন বিসিএস ক্যাডার হয়ে বুক ভরে একটা শ্বাস নিতে কে না চায়?
আর এমনই দীর্ঘশ্বাস এবং সুখের কান্নায় চোখ ভিজিয়েছেন ‘নাঈম সিদ্দিকী’।
গত ৩০ জুন মঙ্গলবার ৩৮ তম বিসিএস পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়।প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থী প্রিলিমিনারিতে অংশগ্রহণ করে। প্রিলি,লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষার শেষে মাত্র ২ হাজার ২০৪ জন বিসিএস ক্যাডার অফিসার পদে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়।দীর্ঘদিনের অধ্যবসায় ও কঠোর পরিশ্রমে যারা সাফল্যের ঠিক চূড়ায় পৌঁছে বিজয়ী রেখা ছুঁয়েছেন তাদেরই একজন ‘নাঈম সিদ্দিকী ‘। যিনি তথ্য ক্যাডারে সহকারী পরিচালক(অনুষ্ঠান) পদে ১ম স্থান অর্জন করেছেন।
নাঈম সিদ্দিকী চট্টগ্রাম টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং কলেজ (সিটেক) এর ৬ষ্ঠ ব্যাচের ওয়েট প্রসেসিং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী।যিনি ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করেন। উক্ত বছরে KDS Textile Mill হতে ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করেন।
আপনাদের জ্ঞাতার্থে বিসিএস ক্যাডার নাঈম সিদ্দিকীর সাক্ষাৎকার তুলে ধরা হলো-
-ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করার পর কোথায় কর্মজীবন শুরু করেন?
ইন্টার্নশিপ শেষে প্রথম কর্মজীবন হিসেবে অাত্মনিয়োগ করি হালদা গ্রুপের অধীনে NFZ টেরি টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি, বোয়ালখালিতে। মাত্র তিন মাস সেখানে কর্মরত ছিলাম।
-বিসিএস ছাড়া কি অন্য কোনো সরকারি চাকুরির জন্য আবেদন করেছেন?
সরকারি ব্যাংকগুলোতে আবেদন করেছি। তবে আমার মূল লক্ষ্য ছিল বিসিএস।
-তাহলে বিসিএস পরীক্ষায় কি ছিল প্রথম কোনো সরকারি চাকুরির জন্য এপ্লাই করা?
হ্যাঁ। বিসিএস-ই প্রথম।NFZ এ তিন মাস কর্মরত থাকার পরে অার অন্য কোনো চাকুরিই করা হয়নি আমার। আমি চেয়েছি পুরোপুরি বিসিএসের পড়াশোনায় নিজেকে নিয়োজিত করতে যাতে প্রথম বিসিএসে ব্যর্থতার মুখ দেখতে না হয়। অার সরকারি চাকুরি হিসেবে ৩৮ তম বিসিএস ছিল অামার কাছে প্রথম চেষ্টা।
-আপনি চাকুরির জন্য বিসিএস-কে কেন প্রথম হিসেবে বেছে নিয়েছেন?
আসলে নিজের মধ্যকার এক প্রকার অাত্মবিশ্বাসের কারণে আমার কাছে মনে হয়েছিল অামি পারব বিসিএসে সফল হতে। এই কনফিডেন্স থেকে বিসিএসকে প্রথম হিসেবে বেছে নেওয়া।
-বিসিএস পরীক্ষায় আপনার এই যে সাফল্য তার পিছনে আপনার যে প্রচেষ্টা ছিল তা যদি জানাতেন?
প্রথমত বলতে হয় অনেক বেশি পড়াশোনা করেছি। নিজেকে ব্যস্ত রেখেছি পড়াশোনার প্রতি।যেহেতু আমরা ইন্জিনিয়ারিং ব্যাকগ্রাউন্ডের তাই অনেক বেশি বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি জোর দিয়ে পড়তে হয়েছে। কারণ আমাদের এই বিষয় সম্পর্কে স্বভাবতই কম জানা থাকে। অার এ বিষয়ে মুখস্থ করার একটা ব্যাপার থাকে তাই এদিকটাতে বেশি ফোকাস করতে হয়েছে।আর অন্যান্য বিষয়গুলো তো আছেই।আমি দৈনিক মিনিমাম ৮ ঘন্টা করে পড়াশোনা করতাম। এই সাফল্যই হচ্ছে আমার দীর্ঘদিনের ধারাবাহিক পরিশ্রম এবং সাধনার ফল।
– ভবিষ্যতে যারা বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে তাদের জন্য আপনার কি রকম নির্দেশনা থাকবে?
অনেকেই আছে ফার্স্ট ইয়ার কিংবা সেকেন্ড ইয়ার থেকে বিসিএসের জন্য পড়াশোনা শুরু করে দেয়। যা আমার কাছে মনপূত হয় না । কারণ নিজের বিষয়ে জ্ঞান অর্জনও জরুরি। ফোর্থ ইয়ারে এসে মোটামুটি বিসিএসের জন্য পড়াশোনা শুরু করা যেতে পারে ।তাই নির্দেশনা থাকবে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস রেখে সময় দিয়ে পড়াশোনা করার।যেহেতু বিসিএস দীর্ঘদিনের সময় সাপেক্ষ প্রক্রিয়া, তাই ধৈর্য রেখে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে।একটা কথা বলতেই হয়,কোনো মতেই পড়াশোনার বিকল্প নেই।
সর্বোপরি তিনি জানান, অদম্য ইচ্ছা,অনেকদিনের ধৈর্য ও অধ্যবসায়ের প্রভাবে তিনি এমন সফলতা পেয়েছেন।
উল্লেখ্য যে,চট্টগ্রাম টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং কলেজ দেশের বস্ত্র প্রকৌশল শিক্ষার একটি উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান।বাংলাদেশ বস্ত্র প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।এই প্রতিষ্ঠানের গ্রেজুয়েটরা দেশের বস্ত্র খাত ছাড়াও বিভিন্ন খাতে কার্যকরী অবদান রেখে চলেছেন।
Reporter :
Md Mamun haque
Chittagong Textile Engineering College (CTEC)
Batch :14th
Email:[email protected]