Saturday, November 23, 2024
Magazine
More
    HomeBusinessবন্দরের পথ ধরে টেক্সটাইল বিশ্ব দরবারে

    বন্দরের পথ ধরে টেক্সটাইল বিশ্ব দরবারে

    এক কালের যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ আজ উন্নতির রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। আর এই উন্নতির ধারাবাহিকতার সিঁড়ি হিসাবে কাজ করেছে বাংলাদেশের প্রতিটি সম্ভাবনাময় খাতের রপ্তানি বাণিজ্য। রপ্তানি বাণিজ্যের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে উৎপাদিত মালামাল পরিবহন। আর পরিবহন ব্যবস্থার দিক দিয়ে বাংলাদেশেরে অবস্থান প্রশংসার দাবিদার। স্থল পথে মালামাল পরিবহন থেকে  জল পথে পরিবহন সাশ্রয়ী; আর বাংলাদেশের নদী পথ সারা বাংলাদেশকে জালের মতো ছেয়ে রেখেছে যার কারণে এই নদী কেন্দ্রিক নদী বন্দর আর সমুদ্র কেন্দ্রিক সমুদ্র বন্দর গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের প্রধান এবং মূল তিনটি সমুদ্র বন্দর রয়েছে যার মাধ্যমে বাংলাদেশের উৎপাদিত পণ্য বিশ্ব বাজারে রপ্তানি হচ্ছে।বন্দর তিনটি হল চট্টগ্রাম বন্দর ,মোংলা বন্দর ,পায়রা বন্দর।

    বাংলাদেশের রপ্তানিমূখী সবথেকে সম্ভাবনাময় শিল্প হচ্ছে টেক্সটাইল।বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্প যাত্রা শুরু করে ষাটের দশকে। তবে সত্তরের দশকের শেষের দিকে রপ্তানিমুখী খাত হিসাবে এই শিল্পের উন্নয়ন ঘটতে থাকে। বর্তমানে এটিই বাংলাদেশের সব থেকে বড় রপ্তানিমুখী শিল্পখাত। এই টেক্সটাইল পণ্যের প্রথম চালানটি রপ্তানি হয় ১৯৭৮ সালে। এর পর দিনে দিনে কমেছে কাঁচামাল আমদানি আর বেড়েছে রপ্তানির জন্য উৎপাদিত টেক্সটাইল সামগ্রী।

    বাংলাদেশের উৎপাদিত টেক্সটাইল সামগ্রি রপ্তানিতে বন্দরসমুহ প্রধানত চারটি সমুদ্র বন্দরের উপর নির্ভরশীল। এর মধ্যে সবথেকে বেশী ৪৪ শতাংশ পণ্য পরিবহন হয় সিঙ্গাপুর বন্দরের মাধ্যমে, ৩৭ শতাংশ পণ্য হয় শ্রীলঙ্কার কলোম্ব বন্দরের মাধ্যমে। এরপর মালয়েশিয়ার তানজুম পেলিপাস বন্দর হয়ে সারে ১২ শতাংশ এবং মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলাং বন্দরের মাধ্যমে ৭ শতাংশ পণ্য পরিবহন হয়। বাংলাদেশের উৎপাদিত টেক্সটাইল সামগ্রীর একটি অংশ রপ্তানি হয় চীনে। সেই ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর বন্দর ব্যবহার করা হয়। কেননা রপ্তানি পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে চীনে পোঁছা অনেক সহজ ও সময় সাশ্রয়ী। আর আমেরিকা ও উত্তর আমেরিকাতে টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি করা হয়ে থাকে বাংলাদেশের বন্দর থেকে কলোম্ব বন্দর দিয়ে। রপ্তানি ক্ষেত্রে কলোম্ব বন্দরই বেশী ব্যবহার করে বাংলাদেশ কেননা, আমাদের বেশির ভাগ রপ্তানি ইউরোপ-আমেরিকাতে ।তাই বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর হয়ে কলোম্ব দিয়ে গন্তব্যে যাওয়া সহজ । তবে বর্তমানে ইউরোপ আমেরিকাতে টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানিতে গতি আনতে চট্টগ্রাম থেকে কলোম্ব হয়ে আরব-আমিরাতের জেবেল আলী সমুদ্র বন্দরে পাঠানো হয় , সেখান থেকে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন গন্তব্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মুলত কলোম্ব বন্দরের সাথে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরের কানেক্টিভিটি ভালো হওয়ার কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে েটক্সটাইল সামগ্রী রপ্তানীর ক্ষেত্রে কলোম্ব বন্দরকে বেছে নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে টেক্সটাইল সামগ্রীর কন্টেইনার সরাসরি ইউরোপ-আমেরিকাতে যাওয়ার সুযোগ নেই। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রপ্তানি পণ্যের কন্টেইনার নিয়ে ছোট বা ফিডার জাহাজে করে সিঙ্গাপুর ,শ্রীলংকার কলোম্ব , মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলাং ও তানজুম পেলিপাস প্রধানত এই চার বন্দরে যায়। বন্দরে নামানোর পর সেই বন্দর থেকে কন্টেইনার গুলো বড় কন্টেইনার জাহাজ বা মাদার ভ্যাসেলে করে বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরে চলে যায়। এছাড়াও নরওয়ে, চিলি,
    সুইজারল্যান্ড ,ইরান,পাকিস্তান,মিশর , ইন্দোনশিয়া ,ভিয়েতনাম ইত্যাদি দেশে বাংলাদেশে উৎপাদিত টেক্সটাইল সামগ্রী বন্দর পথে সল্প সময়ে , সল্প খরচে সহজ ভাবে পাঠিয়ে দেয়া সম্ভব হচ্ছে।

    বাংলাদেশের মতো একটি দরিদ্র দেশ যেখানে দারিদ্রতা ছিল মানুষের নিত্য দিনের সঙ্গি সেথানে অপার সম্ভাবনার খাত টেক্সটাইল শিল্প আলোর দিশা নিয়ে আসে ,আর এই আলোর দিশার সন্ধান এনে দেওয়ার পিছনে বড় কারিগর হিসাবে বন্দর সমূহকে কল্পনা করা যায়। কেননা বিশ্ব বাজারের সাথে বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পকে অবিচ্ছন্ন ভাবে জুড়ে রেখেছে বন্দরগুলো। পরিবহন ব্যবসাকে করেছে সহজ , রপ্তানি খরচকে করেছে সাশ্রয়ী।

    Writer:Abida Ferdousi

    Department of Textile Engineering

    BGMEA University of Fashion  & Technology (BUFT)

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Related News

    - Advertisment -

    Most Viewed