সুতা আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে অন্যতম।ঘরের দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে যেমন কাপর সেলাই থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে সুতার প্রয়োজন আছে। সুতার প্রকারভেদ, বিভিন্ন সুতার নাম,সুতা কিভাবে তৈরি হয়,সুতার উৎস কি কি ও কোন কোন কাজে কোন সুতা ব্যবহার করা হয়- সেই বিষস গুলো নিয়েই এই আর্টিকেল।
আজকের আলোচনার বিষয় সমূহঃ
১.সুতার উৎস কি?
২.কিভাবে সুতা তৈরি করা হয়?
৩.বিভিন্ন ধরনের সুতার নাম।
৪.সুতা কত প্রকার ও কি কি এবং এর ব্যবহার।
সুতার উৎস কি?
=>সুতার উৎস হলো ফাইবার বা আঁশ।এই ফাইবার গুলো আবার বিভিন্ন উৎস হতে আসে যার উপর ভিত্তি করে সুতার বিভিন্ন প্রকারভেদ এবং সুতার নাম বিভিন্ন রকম। যেমনঃপ্রাকৃতিক ও কৃত্রিম। প্রকৃতিগত ভাবে ফাইবার গুলো প্রধানতঃউদ্ভিদ ও প্রাণী হতে আসে। যেমনঃকটন উদ্ভিদজাত উৎস হতে আসে আর উল প্রাণিজ উৎস হতে আসে। অন্যান্য প্রকৃতিক ফাইবারের মধ্যে রেয়ন,সিল্ক,হেম্প,লিলেন, পাট ইত্যাদি বহুল ব্যবহ্ত হয়।
আবার কৃত্রিম ফাইবারের প্রধান উৎস হলো বিভিন্ন প্রকার কেমিক্যাল বা রাসায়নিক দ্রবাদি।কৃত্রিম ফাইবারের সবচেয়ে ভাল উদাহরণ হল নাইলন এবং পলিস্টার।
কিভাবে সুতা তৈরি করা হয়?
=>সুতার প্রকারভেদ বা বিভিন্ন সুতার নাম অনুযায়ী বিভিন্ন সুতার উৎপাদন প্রক্রিয়া বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।
টেক্সটাইল জগতের উৎপাদন চেইনের প্রথম ধাপ হচ্ছে ফাইবার।এই ফাইবারের spinning এর পর ইর্য়ান বা সেলাইয়ের উপযোগী সুতা পাওয়া যায়।ইর্য়ান একাধিক ফাইবারের সমন্বয়ে গঠিত। এই ইর্য়ানকে বুনন বা উইভিং এর মাধ্যমেই কাপড় তৈরি করা হয়।
বিভিন্ন ধরনের সুতার নাম
=>১.লিলেন সুতাঃলিলেন সুতা খুব শক্ত প্রকৃতির হয়।ইহা সাধারণত গার্মেন্টস শিল্পে ব্যবহ্ত হয়।
২.সিল্ক সুতাঃএই ধরনের সুতা সিল্কের চলমান এবং ভেঙ্গে যাওয়া উভয় ফিলামেন্ট থেকে তৈরি করা হয়।এই সুতা অধিকতর শক্ত এবং উন্নতমানের সুতা।
৩.কটন সুতাঃকটন সুতা আবার ৩ প্রকার। যথা:
০.নরম কটন সুতা
০.মারসেরাইজড কটন সুতা
০.গ্লেইজড কটন সুতা
৪.পলিস্টার সুতাঃএই সুতা কম দামি এবং শক্ত প্রকৃতির সুতা।কম দামি হওয়ায় খুব বেশি পরিমাণে ব্যবহ্ত হয়।
৫.নাইলন সুতাঃলাইলন সুতা হল ঐ সব সুতার মধ্যে অন্যতম যা ঘরের কাজে এবং বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ব্যবহ্ত হয়।নাইলন সুতা খুব শক্ত ও টেকসই হয়।নাইলন সুতা একধরনের কৃত্রিম সুতা যার প্রচলন ১৯৪০ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয়।এটি হালকা,মসৃন এবং পানি শোষণ করতে পারে না।
৬.রেয়ন সুতাঃরেয়ন সুতার উৎপত্তি ফাইবার থেকে হওয়া সত্ত্বেও এটি উৎপাদনে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয় বিধায় রেয়ন সুতাকে পুরোপুরি ভাবে প্রকৃতিজাত সুতা হিসাবে ধরা হয় না।একব্রডারি কাজে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহ্ত সুতার নাম হলো রেয়ন।উচ্চ গতির এমব্রয়ডারি মেশিনে ব্যবহারের সময় রেয়ন সুতার ছিড়ে যাওয়ার হার খুব কম।এর দাম কম হওয়ায় সিল্কের বিকল্প হিসেবে ব্যবহ্ত হয়।
৭.উলের সুতাঃসাধারণ অর্থে উলেন হল ঐ সব সুতার অন্তর্ভুক্ত যা প্রাণির লোম থেকে উৎপাদন করা হয়।এই সুতা একাধিক ফাইবারের সমন্বয় করে তৈরি করা হয়। এই সুতা শীতের জামা ও কম্বল তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়। এছাড়া এমব্রয়ডারির কাজের ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার রয়েছে।
সুতা কত প্রকার ও কি কি এবং এর ব্যবহারঃ
বিভিন্ন সুতার নাম এবং সুতা কত প্রকার বিষয়টি অনেকটা একই মনে হতে পারে। কিন্তু সুতা কত প্রকার বলতে বুঝানো হয়েছে সুতার টাইপ বা ধরন কি কি। গঠন কৌশলের ভিত্তিতে সুতা কয়েক প্রকার হতে পারে। যেমনঃ
Spun Thread: এই ধরনের সুতা প্রাকৃতিক এবং সিনথেটিক উভয় প্রকার ফাইবার থেকেই তৈরি করা যায়। সবচেয়ে বেশি ব্যবহ্ত spun thread সুতার উদাহরণ হল পলিস্টার ধরনের সুতা। এই সুতা টেকসই ও দীর্ঘ স্থায়ী।
ব্যবহারঃমহিলাদের ব্লাউজ, শিশুদের পোশাক, জিন্স কাপড়, শার্ট,আন্ডার ওয়ার,জ্যাকেট প্রভৃতি তৈরিতে ব্যবহ্ত হয়।
Core Spun Thread :একে industrial thread বলা হয়।এ ধরনের সুতা continuous filament এবংstaple Fiber এর সংমিশ্রণে তৈরি হয়।
ব্যবহারঃউপরোক্ত ব্যবহার ছাড়াও এ ধরনের সুতা ইউনির্ফম এবং চামড়া জাতীয় পণ্যে ব্যবহ্ত হয়।
Filament Thread:এই ধরনের সুতা একক ফিলামেন্ট বা একাধিক ফিলামেন্ট twisting প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়। এটি আবার ৩ ধরনের হয়ঃ
০.মনোফিলামেন্ট থ্রেডঃ
ব্যবহারঃ hair wraps,invisible seams,flags, upholstery প্রভৃতি তৈরিতে ব্যবহ্ত হয়।
০.মাল্টিফিলামেন্ট থ্রেডঃচামড়া জাতীয় পণ্য, Footwears, লাগেজ প্রভৃতিে ব্যবহ্ত হয়।
বাল্ব ফিলামেন্ট থ্রেডঃ পুরুষ মহিলাদের প্রচলিত পোশাক, খেলোয়াড়দের পোশাক সামগ্রীর পণ্য এই সুতা দিয়ে তৈরি করা হয়।
[…] সনি্নবেশ করে যা তৈরি করা হয় তাই সুতা। ফাইবারগুলি yarns এ প্রক্রিয়া করা হয়। […]