ছিড়বে কিন্তু একেবারে ছিড়বে না… এ আবার কেমন কথা? হ্যা ঠিক তাই। জামাকাপড় ছিড়ে যাওয়ার কারনে যখনই আমরা অতিষ্ঠ ঠিক তখনই বস্ত্রপ্রকৌশলের এক অভূতপুর্ব আবিষ্কার হলো এই wolverin febric যা কিনা নিজে থেকেই নিজের ত্রুটিপূর্ণ এবং ছেড়া অংশগুলো মেরামত করে নিতে পারে বাহ্যিক সাহায্য ছাড়াই।
আমরা অনেক হয়ত ‘মিশন মংগল’ মুভিটি দেখেছি,যেখানে মহাকাশ যানের জন্য প্রয়োজন ছিলো হালকা,টেকসই কিন্তু কমদামী প্রলেপনের বস্তু,যা কিনা রক্ষনাবেক্ষন ছাড়াই টিকে থাকবে বছরের পর বছর,সেখানে সব ম্যাটেরিয়ালস কে পিছনে ফেলে নির্বাচিত হয় ‘Wolverine febric’ কারন তার গুনগত বৈশিষ্টের কারনে।
‘Wolverine febric’ কি?
নামের শুরুতে Wolve লেখা দেখে মনে হতে পারে এটির সাথে কোনোভাবে ‘নেকড়ে শেয়াল’ সম্পর্কযুক্ত বা এটি প্রানীজ দেহ থেকে উদ্ভুত কিন্তু মোটেও তা নয় কারন এটি একটি কৃত্রিম ফেব্রিক যা ল্যাবে তৈরি করা হয়েছে।
‘Wolverine febric’ কিভাবে তৈরি করা হয়?
প্রথমত কঠিন অবস্থায় থাকা ‘Squid teeth’ নামক প্রোটিন কে ইস্ট এবং ব্যাকটেরিয়া যোগ করে তা তরল করা হয়। তারপর ত্রেড অবস্থায় থাকা ফাইবার তার মধ্যে যোগ করে তৈরি করা হয় ‘Wolverine febric’ যাতে আরো যোগ করা হয় নানা এনজাইম যাতে তা টিকে থাকতে পারে বেশিদিন।
কিভাবে কাজ করে ‘Wolverine febric’?
কোনো জায়গায় ক্ষতিগ্রস্থ হলে প্রথমত ফেব্রিকে থাকা এনজাইম সনাক্ত করে কোথায় এবং কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে।ক্ষতিগ্রস্থ স্থানে প্রোটিন কার্যকর হয়ে সেখানকার বন্ধনগুলি পুনরুদ্ধার করে এবং ফেব্রিকটি ঠিক আগের মতো হয়ে যায় গুনগত ভাবে।
‘Wolverine febric’ এর দাম?
নাম শুনে দাম বিবেচনা করা নিতান্তই বোকামী।আধুনিক এই ফেব্রিক গুনগত দিকে এগিয়ে থাকলেও এটি তৈরিতে খুব সাধারন উপাদান ব্যবহৃত হয়।এই ফেব্রিক দিয়ে তৈরি একটি শার্ট এর দাম পড়বে ১৩ মার্কিন ডলার বাংলাদেশী টাকায় যা ১০০০ টাকার কাছাকাছি।
‘Wolverine febric’ এর ব্যবহার?
ইদানীং কালে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে আধুনিক এই ফেব্রিক। চিকিৎসা ক্ষেত্রে,ডিফেন্স বেজে,মহাকাশে এবং যেসব জায়গায় প্রতিকূল অবস্থায় পড়তে পারি সেসব ক্ষেত্রে যুগোপযোগী এই ফেব্রিক এর ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ‘Wolverine febric’?
টেক্সটাইল জায়ান্ট খ্যাত বাংলাদেশে এই ফেব্রিক এর ব্যবহার শুরু সবেমাত্র। ‘বাংলামোটর’ নামক খেলনা প্রস্তুতকারী সংস্থান তাদের খেলনার ড্রেসআপের জন্য একটি গার্মেন্টস কে অর্ডার দেয় যেখানে ড্রেস হিসেবে ব্যবহৃত হয় ‘Wolverine febric’ নির্মিত কাপড়। যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ছিল এই আধুনিক ফেব্রিক এর অগ্রযাত্রা,আশা করা যায় কয়েক বছরে এ ফেব্রিক এক যুগান্তকারী নিদর্শন রাখবে বাংলাদেশের বস্ত্রপ্রকৌশলের প্রেক্ষাপটে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি সংস্থা এই ফেব্রিক এর লঞ্চিং এ আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া,Tbs news
অপূর্ব মন্ডল
এপ্যারেল ইঞ্জিনিয়ারিং
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ।