হালকা কাপড়ের আরামদায়ক বস্ত্র টি-শার্ট বা গোল গলার গেঞ্জি। সম্ভবত বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পরিধেয় পোশাকও এটি। লিঙ্গ বৈষম্যহীন এ বস্ত্র তরুণ-তরুণী সবার প্রিয়। টি-শার্টে আঁকা নকশা ও বার্তায় ফুটে ওঠে পরিধানকারীর রুচি, ফ্যাশনবোধ কিংবা সাংস্কৃতিক পরিচয়।
ইতিহাস
টি-শার্টের জন্ম ইতিহাস বহু পুরোনো। খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চ শতকেও নাকি টি-আকৃতির পোশাকের অস্তিত্ব ছিল। তবে পোশাকে টি-আকৃতির যথাযথ দৃশ্যমান ঘটে ৯৬০ থেকে ১২৭৯ সাল সময়ে। এরপর কেটে যায় আরও কত শত বছর। ১৯০৭ সালে ইংল্যান্ডের স্যামুয়েল সায়মন ‘স্ক্রিন প্রিন্টিংয়ের’ কৌশল আবিষ্কার করলে বদলে যেতে শুরু করে গোল গলার, হাতা কাটা এ পোশাকের ইতিহাস।১৯১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী তাদের আনুষ্ঠানিক পোশাকের (ইউনিফর্ম) ভেতরে পরিধানের জন্য হালকা সাদা কটনের গেঞ্জি যুক্ত করে। অবশ্য ১৮৮০-এর দশকে ইংল্যান্ডের শৌখিন বক্সার ও দাঁড় টানিয়েরা (রোয়ার) একই রকম গেঞ্জি পরিধান করতেন।
তবে ‘টি-শার্ট’ শব্দটির সঙ্গে বিশ্বের প্রথম পরিচিতি ঘটে ১৯২০ সালে। এফ স্কট ফিটজগেরল্ডের লেখা ‘দিজ সাইড অব দ্য পেরাডাইজ’ উপন্যাসে প্রথম এই শব্দজোট ব্যবহার হয়। একই বছর শব্দটি ‘মেরিয়াম-ওয়েবস্টার ডিকশনারি’ তে যুক্ত হয়।
স্মারক হিসেবে টি-শার্ট
১৯৫৫ সালে বিনোদন প্রতিষ্ঠান ‘ডিজনিল্যান্ড’ স্মারক হিসেবে প্রথম টি-শার্ট বিক্রি শুরু করে। ভ্রমণের স্মৃতি সংরক্ষণে বিভিন্ন বার্তা সংবলিত এসব টি-শার্ট বেশ জনপ্রিয় ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে।
প্রযুক্তি এনে দেয় টি-শার্ট এর আরও জনপ্রিয়তা
১৯৫৯ সালে টেকসই কালি ‘প্লাস্টিসোল’-এর আবিষ্কার এবং তার পরের বছর ‘মাল্টি কালার রোটারি স্ক্রিন প্রিন্টিং মেশিন’ আবিষ্কার টি-শার্টের রূপ-নকশা আরও বদলে দেয়। সিনেমা-নাটকের চরিত্রগুলো টি-শার্ট গায়ে দেখা যেতে লাগল। এভাবে আধুনিক ও ফ্যাশনপণ্য হিসেবে বেশ কদর পেতে শুরু করে টি-শার্ট।
চুরি ঠেকাতে বার্তাবাহক টি-শার্ট
১৯৩৩ সালে ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার (ইউএসসি) একটি ঘটনা টি-শার্টের ব্যবহার ভাবনাকে আমূল বদলে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি তাদের ক্রীড়াবিদদের জন্য টি-শার্ট তৈরি করেছিল। কিন্তু মুশকিল হলো এগুলো চুরি হয়ে যায়। চুরি ঠেকাতে শেষ পর্যন্ত ওই টি-শার্টগুলোতেই মোটা অক্ষরে লিখে দেওয়া হলো, ‘প্রোপার্টি অব ইউএসসি’। অর্থাৎ এটি ইউএসসির সম্পদ। বেশ কার্যকর হলো এ উপায়। বন্ধ হলো চুরি।
তথ্যঃ উইকিপিডিয়া.
ছবিঃ ফ্যাশন এন্ড টেক্সটাইল মিউজিয়াম।
Writer Information:
Fouzia Jahan Mita
NITER 10 th Batch
Department of Textile Engineering.