পরিবেশ ও অর্থনীতির দুটোই বাঁচাতে প্রয়োজন সবুজ শিল্পায়ন। ইতোমধ্যে অনেক দেশই তাদের ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে সবুজ শিল্পায়নের ধারাকে কাজে লাগিয়েছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।
তেমনি বিশ্বসেরা সবুজ শিল্পায়নের কারখানাগুলোর রোল মডেল হল নারায়ণগঞ্জের-‘প্লামি ফ্যাশনস লিমিটেড’। কারখানার সনদ প্রদানকারী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আমেরিকার ইউএস গ্রীন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) থেকে বিশ্বের প্রথম পরিবেশবান্ধব নীট পোশাক কারখানার পাশাপাশি সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব কারখানা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সাথে পেয়েছে ‘লিড প্লাটিনাম’ সনদ। এ সনদ পেতে হলে একটি কারখানার বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রয়োজন ৮০ পয়েন্টের, সে জায়গায় প্লামি পেয়েছে ৯২ পয়েন্ট। যা এর আগে কখনো কোনো ইন্ডাস্ট্রি পায়নি।
প্রায় ৩০ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা নানারকম দৃষ্টিনন্দন স্থাপনার মধ্যে রয়েছে কৃত্রিম ছোট লেক-ঝর্ণা, আর বেশিরভাগ জায়গায় রয়েছে নানা রকম গাছ গাছালির মেলা। মোট কথা,সবকিছু মিলিয়ে এক অসাধারণ পরিবেশের সমাহার।
এমন মনোরম পরিবেশে দোতলা ভবনে চলে ক্রেতাদের প্রয়োজন মোতাবেক নীট পোশাকের উৎপাদন কার্যক্রম। সবুজ শিল্পায়নের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ শ্রমিক অধিকারের সব বিষয়ই যত্নসহকারে দেখা হয় বিশ্বসেরা কারখানায়। কর্মক্ষেত্রে স্বস্তির জন্য হয়েছে এয়ার কন্ডিশনারের পরিবর্তে এয়ারকুলার ও স্কাইলাইটের ব্যবস্থা।
অপর একটি ভবনে উৎপাদন করা হয় নিজেদের চাহিদা মতো নীট কাপড়। তাছাড়া নির্দিষ্ট চুক্তি মোতাবেক অন্যান্য কারখানার কাপড়ও তৈরি করা হয় এখানে। সেইসাথে কাপড়ে পছন্দমত রঙ মেশাতে রয়েছে কারখানাটি নিজস্ব ডাইয়িং সেকশন।
সর্বোপরি, লিড সনদের শর্ত মোতাবেক তারা কারখানার এসব কাজে ব্যবহার করা জ্বালানি সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি। আর এসব জ্বালানির একটা বড় অংশের যোগান ঘটে সোলার প্যানেল থেকে। সাথে পরিবেশকে সুরক্ষিত রাখতে তারা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে দূষিত পানিকে পরিশোধন করে।
বিশ্বব্যাপী এই সবুজ শিল্পায়নের ধারণাটি খুব বেশিদিনের না হলেও বাংলাদেশ এর সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিলে তুলনামূলকভাবে আরো কম খরচেই এমন উৎপাদনশীল সবুজ কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব।
Writer Information:
Tazim Sultana Nandita
Ahsanullah University of Science and Technology
Department of Textile Engineering ( Batch-40)