Friday, November 22, 2024
Magazine
More
    HomeTechnical TextileAerogel ।। (অ্যারোজেল)

    Aerogel ।। (অ্যারোজেল)

    আমরা অধিকাংশ মানুষ হালকা পদার্থ বলতে হিলিয়াম গ্যাস, তুলা, বাতাস এই জাতীয় পদার্থগুলোকে বুঝি তবে আপনারা জেনে অবাক হবেন এর চেয়েও হালকা পদার্থ পৃথিবীতে বিদ্যমান রয়েছে। পৃথিবীতে বিদ্যমান সবচেয়ে হালকা পদার্থ হচ্ছে Aerogel এটি ১৯৩০সালে আবিষ্কার করেন Prof. Samuel Stephens Kistler. Aerogel সাধারনত ৯৬ শতাংশ বাতাস এবং ৪ শতাংশ পাতলা Silicon Dioxide এর সংমিশ্রনে গঠিত। অ্যারোজেল এবং তন্তুর সংমিশ্রন ঘটিয়ে টেক্সটাইল শিল্প খুব হালকা ,নমনীয় এবং আরামদায়ক পোশাক উৎপাদনে সক্ষম।

    📚 আসুন জেনে নেয়া যাক অ্যারোজেল সর্ম্পকিত কিছু তথ্য। Aerogel মূলত তিন প্রকারের হয়ে থাকে আর সেগুলা হল;

    ১। Silica Aerogel: সিলিকা অ্যারোজেল হল সূক্ষ্ণ খাঁটি জেল যা সিলিকা অ্যালোকক্সাইড বা লবণের হাইড্রোলাইসিস-সংশ্লেষণ প্রতিক্রিয়া থেকে প্রাপ্ত। এটি একক গ্লাসযুক্ত এবং হালকা ওজনের উপাদান যা প্রায়শই নিরোধক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। কার্বন এবং ধাতব অক্সাইড অ্যারোজেল গুলির তুলনায় সিলিকা অ্যারোজেলগুলি সাধারণত টেক্সটাইলের জন্য ব্যবহৃত হয় ।

    ২। Carbon Aerogel: কার্বন ভিত্তিক অ্যারোজেল গুলি কালো এবং স্পর্শ করলে কাঠকয়লার মতো মনে হয় এবং উচ্চ পৃষ্ঠতল থাকে। এগুলি বৈদ্যুতিকভাবে পরিবাহী এবং সস্প্রতি কার্বন অ্যারোজেলকে সুপার ক্যাপাসিটার, জ্বালানী কোষ এবং বিশোধন সিস্টেমের জন্য খুবি দরকারি উপাদান হিসেবে বিজ্ঞানীরা আখ্যায়িত করেছেন।

    ৩। Metal Oxide Aerogel: এগুলি ধাতব অক্সাইড (আয়রন, টিন, তামা, স্বর্ণ) থেকে তৈরি হয় এবং রাসায়নিক রূপান্তরের জন্য অনুঘটক হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এগুলি বিস্ফোরক এবং কার্বন ন্যানো টিউব উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় ।

    এই তিন ধরনের Aerogel এর মধ্যে কেবল সিলিকা অ্যারোজেলগুলির অবিশ্বাস্য অন্তরক বৈশিষ্ট্যগত কারণে টেক্সটাইল শিল্পতে ব্যবহৃত হয়। তবে কিছু সীমাবদ্বতা আছে। আমরা কাঁচা, খাঁটি সিলিকা Aerogel ব্যবহার করতে পারি না কারণ এটি প্রকৃতিতে খুব ভঙ্গুর। তবে সিলিকা অ্যারোজেলগুলির অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলি অত্যন্ত কার্যকর যখন এটিকে ফাইবারে সাথে সংশ্লেষণ করা হয় তখনি এটি ফাইবারের অন্যান্য উপকরণগুলির সাথে যুক্ত হয়ে শক্তিশালী হয়। এই যৌগিক পদার্থগুলির নিম্ন তাপ পরিবাহিতার [0.017-0.021W / এমকে] কারণে দুর্দান্ত্য অন্তরক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি উচ্চ তাপমাত্রায় এবং ক্রাইওজেনিক তাপমাত্রায় [-150 ° C থেকে -273 ° C উত্তাপের জন্য] এর কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সক্ষম।

    📜 Aerogel এর কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো:

    (i) Ultra-low thermal conductivity
    (ii) Ultra-low refractive index
    (iii) Ultra-low dielectric constant
    (iv) High surface area
    (v) High refractive index, porosity

    যেভাবে অ্যারোজেল তৈরি করে হয়ে থাকে;

    Aerogel Solution – (Aerogel কণার কোলয়েডাল সাসপেনশন) থেকে এর যাত্রা শুরু হয় এবং সুপারক্রিটিকাল অবস্থায় এর দ্রবনকে শুকানো হয়। ফলে এই Aerogel Solution এর স্ট্রাকচারের এমন পরিবর্তন হয় যে এর থেকে সমস্ত তরল অপসারিত হওয়ার মাধ্যমে অ্যারোজেল উৎপাদিত হয়। এরপরে এটি সিলিকা, অ্যালুমিনা, কার্বন বা অন্যান্য জাতীয় পদার্থগুলির ন্যানোমিটার স্কেলের মাইক্রোস্কোপিক ইনসুলিউটিভ এয়ার পকেটগুলির সাথে প্যাক করা হয় যা বায়ু সহ বেশিরভাগ গ্যাসের অণুগুলির পক্ষে প্রবেশ করা অসম্ভব করে তোলে। ফলস্বরূপ তাপমাত্রার হ্রাস পেতে থাকে। এর ফলে এটি অবিশ্বাস্য অন্তরক বৈশিষ্ট্য অর্জিত হয়।

    অ্যারোজেল বিশেষ করে চিকিৎসা, অগ্নি নির্বাপক পোশাক, শীতের জ্যাকেট, স্পেস স্যুট এবং বায়ুপ্রবাহ পরিস্কারের জন্য নতুন, সাশ্রয়ী এবং আরও কার্যকর টেক্সটাইল উৎপাদনে সহায়তা প্রদান করে। অ্যারোজেল ভিত্তিক পণ্যগুলি শোষণকারী, অনুঘটক আকারে বিকশিত হয় ফলে তেল ছড়িয়ে পড়া এবং বিভিন্ন বিষাক্ত যৌগগুলি ক্যাপচার এবং সংরক্ষণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে। গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হ্রাস করার লক্ষ্যে ব্যবহৃত অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে অ্যারোজেল উচ্চতর অন্তরক হিসেবে কাজ করতে পারে। পরিবেশগত অ্যাপ্লিকেশনগুলির জন্য এই অ্যারোজেল ভিত্তিক পণ্যগুলি জল, বায়ু এবং শব্দদূষণ হ্রাসে অবদান রাখে।

    অন্যান্য সাধারণভাবে ব্যবহৃত উপকরণগুলির তুলনায় অ্যারোজেলে দুই থেকে ছয়গুণ বেশি অন্তরক শক্তি রয়েছে। মাউন্ট এভারেস্টের আরোহীরা রায়ুরোধী ও গরম পোশাকের পাশাপাশি স্লিপিং ব্যাগ ব্যবহার করেছে যা অ্যারোজেলের সংমিশ্রণে তৈরি। স্পেনে অ্যারোজেল দ্বারা তৈরি “পাইরোজেল” নামের পোশাক, পর্বতারোহীদের উষ্ণতার জন্য কার্যকরী হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে, যেখানে পোশাকের হালকা ওজন এবং নমনীয়তা অত্যন্ত দরকারী।

    অ্যারোজেল গত দশকগুলির মধ্যে অন্যতম প্রতিশ্রুতিযুক্ত তাপ নিরোধক উপকরণ। অ্যারোজেলগুলি বিভিন্ন ধরণের উচ্চ পারফরম্যান্স পণ্য যেমন অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল টেক্সটাইলস, মেডিকেল টেক্সটাইলস, ইনসুলেটেড বিল্ডিং টেক্সটাইল, ফায়ার রেজিস্ট্যান্স টেক্সটাইলস, স্পেসসুট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। ১৯৬০ সালে নাসা তাদের মহাকাশ অভিযানে অ্যারোজেল ব্যবহার করেছিল। এখনও এয়ারজেলের সম্ভাব্য প্রচুর ব্যবহার রয়েছে যার জন্য আরও গবেষণা এবং বিকাশ প্রয়োজন।

    ✒️ Writer information:

    Md. Murad Hassan
    Primeasia University
    Batch: 192
    Campus Core Team Member (TES)

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Related News

    - Advertisment -

    Most Viewed