বাংলাদেশের টেক্সটাইল সেক্টরে বর্তমানে একটি সম্ভাবনাময় এবং ক্রমবর্ধমান খাত হচ্ছে All Over Printing. ১৯৮০ সালের কাছাকাছি সময় থেকে বাংলাদেশে All over printing এর যাত্রা শুরু হয় সময়ের সাথে সাথে মানুষের রুচিবোধ পরিবর্তন হচ্ছে এবং তারই পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে সারা বিশ্বে এর চাহিদা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলছে। অধিকাংশ ফ্যাশন সচেতন মানুষদের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে All-over printed পোশাক।
টেক্সটাইলের ভাষায় প্রিন্টিং বলতে মূলত রং প্রয়োগ করে ফেব্রিকের উপর কোনো নির্দিষ্ট প্যাটার্ন বা ডিজাইনপ্রদান করাকে বোঝায়। অর্থাৎ Design ও Color এর সমন্বয়ে Fabric এর উপর ১ টি হতে ২০ টি color print করাই হলো টেক্সটাইল প্রিন্টিং। আরো বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে, শিল্পীর আঁকা একটা ডিজাইনকে বিভিন্ন Chemical এবং Dyes এর মিশ্রণে Color দিয়ে ফুটিয়ে তোলা এবং বিভিন্ন Machineries এবং Technology Apply করে Fixation করার নামই হলো Printing।
Textile printing যে Method এ করা হোক না কেন প্রথমেই Design Develop করতে হয়। এই জন্য Design কে Printing এর Heart বলা হয়।
All Over Printing হলো একটি বিশেষ ধরনের প্রিন্টিং যার মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট ডিজাইনই সম্পূর্ণ ফেব্রিকে বারবার ফুটিয়ে তোলা হয়। এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ ফেব্রিকটি আরো বেশি আকর্ষনীয় হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৮০ টি export-oriented industry তে all over printing করা হয়। All Over Printing সাধারনত ৩ টি machine এর মাধ্যমে করা হয়। এগুলো হলো-
1. Rotary printing machine
2. Flatbed printing machine
3. Digital printing machine
Rotary printing machine:
এই প্রিন্টিং মেশিনটি মূলত নিকেলের তৈরি কয়েকটি সিলিন্ডার আকৃতির স্ক্রিন সংযুক্ত করে তৈরি করা হয়।১৯৬৩ সালে হল্যান্ডে সর্বপ্রথম continuous printing process এর ধারনাকে কাজে লাগিয়ে এই মেশিনটি তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মেশিনারিজ ম্যানুফ্যাকচারার ইন্ডাস্ট্রির মাধ্যমে Rotary printing machine এর আরো develop করা হয়।
Rotary printing machine এর কয়েকটি ব্র্যান্ড–
1. Reggiani- (Italy)
2. Stork- (Netherlands)
3. Zimmer- (Austria)
4. BUSER- (Switzerland)
5. MHMS- (Austria)
6. Harish- (India)
7. Ji- long- (China)
টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে Rotary printing machine মূলত যেসব অংশ নিয়ে গঠিত হয় সেগুলো হলো-
1. Screen
2. Print paste feed
3. Design area
4. Printed area
5. Squeegee blade
6. Color tank
7. Blanket
8. Level control
Rotary printing machine এ একইসাথে ১২-১৬ টি কালার প্রিন্ট করা যায় একটি ডিজাইনে যতটি কালার থাকে, ডিজাইনটি প্রিন্ট করতে মেশিনে ঠিক ততটি স্ক্রিন ব্যবহার করা হয়। স্ক্রিনের ব্যাস (Diameter) 64.15 cm হয়ে থাকে। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে 82 cm, 91.4 cm ব্যাসের স্ক্রিনও ব্যবহার করা হয়। এই মেশিনে প্রতি মিনিটে 30-80 m ফেব্রিক প্রিন্ট করা যায় যা সাধারনত ডিজাইনের কালার সংখ্যার (No. of color) উপর নির্ভর করে।
Rotary printing machine এ ফেব্রিক প্রিন্ট করার প্রক্রিয়া-
প্রথমেই ডিজাইন অনুসারে স্ক্রিন প্রিপারেশন করে স্ক্রিনগুলো মেশিনে সেট করা হয়। এরপর প্রিন্টিংয়ের জন্য ফেব্রিকটি একটি নির্দিষ্ট টেনশনে প্রিন্টারে প্রবেশ করানো হয়। মেশিন চালু করলে স্ক্রিনগুলো ঘুরতে শুরু করে এবং ফেব্রিকটি ঘুর্ণায়মান স্ক্রিনের নিচ দিয়ে pass করে। ফেব্রিক pass করার সময় color tank থেকে কালার পাম্প হয়ে স্ক্রিনে পৌছায় এবং স্ক্রিনগুলোর সাথে যুক্ত করা squeegee blade এর প্রেশারের মাধ্যমে স্ক্রিন হতে ফেব্রিকে কালার প্রিন্ট হয়। প্রিন্ট করা ফেব্রিক drying হয়ে Rotary machine হতে বের হয় এবং পরে Loop stream machine দিয়ে color fixation করা হয়। এভাবেই Rotary printing machine এর মাধ্যমে ফেব্রিক প্রিন্ট করা হয়।
Rotary printing machine এর সুবিধাসমূহ–
1. Printing speed বেশি। প্রতি মিনিটে ৩০ থেকে ৮০ মিটার ফেব্রিক প্রিন্ট করা যায়।
2. ১২-১৬ টি কালারের ডিজাইন খুব সহজেই প্রিন্ট করা যায়।
3. প্রিন্ট করা ফেব্রিকে কোনো Joint mark লক্ষ্য করা যায় না।
4. Woven এবং Knitted ফেব্রিক সহজেই প্রিন্ট করা যায়।
Rotary printing machine এর অসুবিধাসমূহ–
1. Printing cost তুলনামূলকভাবে বেশি হয়ে থাকে।
2. সব measurement এর ডিজাইন প্রিন্ট করা যায় না।
3. Fabric wastage বেশী হয় ।
Flatbed printing machine:
এই প্রিন্টিং মেশিনে মূলত flat screen থাকে যা অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি ফ্রেমে পলিয়েস্টার কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়। মেশিনে Design এবং Measurement অনুযায়ী বিভিন্ন সাইজ এর ফ্রেম ব্যবহার হয়। একটি ডিজাইনে যতটি কালার থাকে ঠিক ততটি স্ক্রিন ব্যবহার করে fabric প্রিন্ট করতে হয়। ৩ ধরনের flatbed printing machine রয়েছে। এগুলো হলো-
1. Manual flatbed printing machine
2. Semi-automatic flatbed printing machine
3. Fully Automatic flatbed printing machine
বর্তমানে All over printing এর ক্ষেত্রে সাধারনত Fully automatic flatbed printing machine ব্যবহার করা হয়। Flat bed printing machine এর মাধ্যমে (১২-১৬) টি কালারের যেকোনো measurement এর ডিজাইন প্রিন্ট করা যায়। প্রতি মিনিটে 15-30 m ফেব্রিক প্রিন্ট করা যায় যা ডিজাইনের কালারের সংখ্যার (Number of color) উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ color যত কম হবে, Print এর speed তত বেশী হবে। থ্রি-পিস, শাড়ী, ওড়না, বেডশিট এসব সাধারনত Flatbed printing machine এর মাধ্যমে প্রিন্ট করা হয়।
Flatbed printing machine এর কয়েকটি ব্র্যান্ড–
1. KUIL- (South Korea)
2. INTOMA- (Taiwan)
3. Reggiani- (Italy)
4. STORK- (Netherlands)
5. YUJIN- (Korea)
6. ZIMMER- (Austria)
7. CST- (Germany)
Flatbed printing machine এর গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো হলো-
1. In-feed device
2. Glue trough
3. Flat rubber blanket
4. Double-blade squeegee trough
Flatbed printing machine এর মাধ্যমে ফেব্রিক প্রিন্ট করার প্রক্রিয়া-
প্রথমেই ডিজাইন অনুসারে আলাদা আলাদা কালারের জন্য আলাদা আলাদা স্ক্রিন প্রিপারেশন করে মেশিনে সেট করা হয়। অতঃপর যে ফেব্রিকটি প্রিন্ট করা হবে তা মেশিনের Blanket এর সাথে ভালো ভাবে সংযুক্ত করা হয়। মেশিন চালু করলে blanket এ সংযুক্ত থাকা ফেব্রিকটি স্ক্রিনের নিচ দিয়ে pass করা শুরুহয়। Manually স্ক্রিনটিতে print paste দেওয়া হয়। একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে বা নির্দিষ্ট repeat ব্যবধানে ফেব্রিকটি থেমে যায়। এই অবস্থায় স্ক্রিনটি ফেব্রিকের সংস্পর্শে আসে। একটি automatic squeegee ফ্রেমের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যায় এবং এতে করে স্ক্রিন এর open area থেকে কালারটি ফেব্রিকে প্রিন্ট হয়। প্রিন্ট সম্পন্ন হলে স্ক্রিনটি উপরে উঠে যায় এবং ফেব্রিকটি এভাবে প্রতিটি স্ক্রিন pass করার ফলে সম্পূর্ণ ডিজাইনটি ফেব্রিকে প্রিন্ট হয়। এরপর ফেব্রিকটি drying এবং color fixation সেকশনে গিয়ে প্রিন্টিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এভাবে Flatbed printing machine এ All over print হয়ে থাকে।
Flatbed printing machine এর সুবিধাসমূহ–
1. যেকোনো measurement এর ডিজাইন প্রিন্ট করা যায়।
2. প্রিন্ট কোয়ালিটি বেশ ভালো।
3. Production cost তুলনামূলক কম।
4. Glitter print, discharge print ভাল হয়।
Flatbed printing machine এর অসুবিধাসমূহ–
1. Production speed তুলনামূলক কম।
2. মেশিনটি তুলনামূলক বড়। তাই মেশিন সেটআপে জায়গা বেশি লাগে।
3. Design repeat এর Joint mark আসার সম্ভাবনা থাকে।
4. Vertical line প্রিন্ট করতে কিছুটা সমস্যা হয়।
Digital printing machine:
এটি all over printing সেক্টরে একটি আধুনিক এবং যুগান্তকারী প্রযুক্তি। Digital printing machine এর মাধ্যমে প্রিন্ট করার জন্য কোনো স্ক্রিন বা ফিল্ম ব্যবহার করা হয় না। সরাসরি ink এর মাধ্যমে এটি ফেব্রিকে প্রিন্টিং সম্পন্ন করে। এছাড়াও এর মাধ্যমে ফেব্রিকে 2D effect, 3D effect এবং multi-dimensional ডিজাইনের প্রিন্ট করা যায়।
Digital printing machine এ প্রিন্ট করার জন্য Adobe Photoshop (কিছু ক্ষেত্রে Adobe illustrator) এর মাধ্যমে ডিজাইন তৈরি করতে হয়। এক্ষেত্রে প্রিন্টিংয়ের জন্য কোনো color separation এর প্রয়োজন হয় না। ডিজাইনের কালারগুলো সাধারনত ৮ টি ink color এর মিশ্রনে তৈরি হয়ে ফেব্রিকে প্রিন্ট হয়ে থাকে।
Digital printing machine এর সুবিধাসমূহ–
1. কোন ধরনের Screen ব্যবহার করতে হয় না ।
2. প্রিন্ট কোয়ালিটি বেশ ভালো।
3. Chemical waste এর পরিমান কম
4. যেকোনো measurement এর repeat design প্রিন্ট করা যায়।
5. কোনো color limit নেই।
Digital printing machine এর অসুবিধাসমূহ–
1. Printing speed কম।
2. Printing cost বেশি।
3. Blended fabric প্রিন্ট করা যায় না।
4. তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়।
5. White color প্রিন্ট করা যায় না ।
Digital all over printing কে “Next generation printing” বলা হচ্ছে এবং এই প্রিন্টিংয়ের সমস্যা গুলোও ধীরে ধীরে গবেষনার মাধ্যমে সমাধান করা হচ্ছে। ধারনা করা যাচ্ছে, ভবিষ্যতে Digital all over printing এর মাধ্যমে টেক্সটাইল এবং ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
চলবে……………
আর্টিকেলটি লিখতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সহায়তা করায় বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি-
Shawkat Hossain Sohel
Chief Designer
Unifill Composite Dyeing Mills Ltd.
Writer Information:
Raktim Roy
Department of Textile Engineering (2nd Batch)
Jashore University of Science & Technology
Its a very helpful page.
Awesome article on AOP. Learn many things.