আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড এবং খুচরা বিক্রেতারা তাদের পণ্য তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান ও রফতানি খরচের জন্য অনেকটা চাপের সম্মুখীন হচ্ছেন।
তাছাড়া, উৎপাদন খরচ
বর্তমানে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে যার ফলে নতুন উদ্যোক্তারা খুব কম মুনাফা পান। এমনি বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোও যে মুনাফা অর্জন করে সেটাও তাদের জন্য অনেক কম। যদি আমরা এ সেক্টরে টিকে থাকতে চাই আমাদের আরও নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে।
সাবকন্ট্র্যাক্টিং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম যা নতুন উদ্যোক্তা
তৈরির মাধ্যমে টেক্সটাইল সেক্টরকে মজবুত করছে। গার্মেন্টস শিল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে
বাংলাদেশের অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশি কোম্পানিগুলোর উপকন্ট্র্যাক্টর হিসেবে কাজ করত কিন্তু বর্তমানে তারা সরাসরি ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ সহ গার্মেন্টস রপ্তানিত করে
একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠছেন এবং তাদের ব্যবসা প্রসারিত করছেন।
তবে তাজরিন ফ্যাশন এ আগুন
এবং রানা প্লাজা ভবন ধসে পড়ায় নিরাপত্তার ভিত্তিতে সাবকন্ট্র্যাকিং প্রায় নিষিদ্ধ ছিল ।
সাবকন্ট্র্যাক্টিং নিষিদ্ধ করে কোন সমাধান করা সম্ভব নয়। বর্তমানে যেসব সাবকন্ট্র্যাক্টিং কারখানা রয়েছে তাদের জন্য জন্য সঠিক গাইডলাইন দরকার। পোশাক প্রস্তুতকারক,
বাংলাদেশ গার্মেন্টস এর নেতারা, উৎপাদক এবং রপ্তানিকারী
সমিতি (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ
নিটওয়্যার
প্রস্তুতকারক এবং
রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ),বাংলাদেশ টেক্সটাইল প্রস্তুতকারক
বিভিন্ন বাণিজ্য সংস্থা, খুচরা বিক্রেতা এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডকে গাইডলাইন করতে
সাবকন্ট্রাক্টিংয়ের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সাবকন্ট্রাক্টিং এর মাধ্যমে উদ্যোক্তা এবং দক্ষ শ্রমিক উভয়ই তৈরি করা সম্ভব।
সাবকন্ট্র্যাক্টর এর দেয়া গাইডলাইন এর উপর ভিত্তি করে কারখানার মান সুরক্ষা, পণ্যের দাম ঠিক করা, অর্থ অ্যাক্সেস
এবং অন্যান্য বাণিজ্য সম্পর্কিত সমস্যা সমাধান করা হয়।
ছোট স্টার্টআপস বা ছোট কারখানা
মালিকদের যদি গাইডলাইন দেওয়া হয় তবে তাদের কাজ করার জায়গা
এবং পর্যাপ্ত সুযোগসুবিধা ও থাকবে।
এমনকি একটি বিশেষ শিল্প বা অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দ করা যেতে পারে
যেন ছোট ব্যবসায়ীরা বড় ব্যবসায়ীদের
সরবরাহ চেইনে সাহায্য করতে পারে।
সাবকন্ট্রাক্টররা প্রধানত বেসিক পোশাক উৎপাদন
করবে। কারণ, বর্তমানে বেসিক পোশাক উৎপাদন
অনেকটা কমেছে যার জন্য পোশাক রপ্তানির গতি
হ্রাস পেয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ,বাংলাদেশে বর্তমানে মোট
পোশাক রপ্তানির প্রায় ৪০% উচ্চতর গ্রাহকদের জন্য।
ফলস্বরূপ, অনেক কারখানা রয়েছে যারা বেসিক পোশাক উৎপাদন ছেড়ে চলেছে। ফলস্বরূপ, অন্যান্য দেশগুলোতে বেসিক আইটেমের জন্য অর্ডার করা হচ্ছে তন্মধ্যে
মায়ানমার, কম্বোডিয়া এবং ভিয়েতনাম অন্যতম। যে অর্ডারগুলো আগে বাংলাদেশ পেত বর্তমানে সেগুলো এ দেশগুলোর দখলে যাচ্ছে এর মধ্যে চীন অন্যতম।
সাবকন্ট্র্যাক্টিং এর মাধ্যমে বাংলাদেশের কারখানাগুলো অর্ডারগুলো নিয়ে বেসিক আইটেম তৈরি করতে পারে
।
উদাহরণস্বরূপ,মিয়ানমারে কয়েক বছর
পূর্বে মোট পোশাক রপ্তানি থেকে আয়
৫০০ মিলিয়ন ডলারের নিচে ছিল,
কিন্তু পাঁচ বছরের মধ্যে এই উপার্জন প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
মিয়ানমার ২০২৪ সালের মধ্যে রফতানির লক্ষ্য প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে এবং এটি সম্ভব হলে
মায়ানমার গ্লোবাল ফ্যাশন বাজারের একটি বড় ভাগ দখল করবে।
মায়ানমার মূলত
বেসিক পোশাক আইটেম থেকে শুরু করে সাবকন্ট্রাক্টিংয়ের সাথেও জড়িত
পোশাক আইটেম ও
রপ্তানি করছে।
বর্তমানে চীনের মতো ভিয়েতনামও রয়েছে একটি শক্তিশালী গার্মেন্টস সরবরাহকারী
দেশ হিসেবে যুক্ত হচ্ছে।সম্ভবত, ভিয়েতনাম ও গ্লোবাল গার্মেন্টস রপ্তানিতে বাংলাদেশকে টপকিয়ে যাবে।
সুতরাং, বাংলাদেশেরও উচিত মান যুক্ত পোশাক আইটেম
তৈরির পাশাোাশি বেসিক পোশাকের উৎপাদন ও চালিয়ে যাওয়া।
বিশেষত, ছোট এবং
মাঝারি পোশাক কারখানাগুলোতেও
এই বেসিক আইটেম উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে হবে।
Writer
Rafiul Islam
E-mail : [email protected]
B.Sc in Textile Engineering (SKTEC)