অনলাইনে বিনয় বা Internet/Network etiquette থেকে Netiquette।
সমাজিক শিষ্টাচারের মতই ইন্টারনেটে বিনয় ও শিষ্টাচারের রীতি হচ্ছে Netiquette।
ইমেইল, সামাজিক মাধ্যম (ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি), অনলাইন চ্যাট, ওয়েব ফোরাম, ওয়েবসাইট মন্তব্য, মাল্টিপ্লেয়ার গেমিং প্রভৃতি প্লাটফর্ম গুলোতে আমরা দৈনন্দিন নানান কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকি।
সামাজিক শিষ্টাচার বহির্ভূত যেমন উন্নত সমাজ কল্পনা করা যায় না তেমন ইন্টারনেট শিষ্টাচার বহির্ভূত সাবলীল ইন্টারনেট প্লাটফর্ম পাওয়া সম্ভব নয়।
বাংলাদেশে নীতিনির্ধারক দ্বারা ইন্টারনেটে আদবকেতার জন্য নির্দিষ্ট নিয়মাবলী বা নির্দেশনার বাধ্যবাধকতা নেই তবে সংবিধানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এর বিভিন্ন ধারা মোতাবেক আইনের শাসন আছে।
নিচে Netiquette এর বেশ কিছু উদাহরণ উল্লেখ করা হলো যা অনুসরণ করা যেতে পারে।
✏জ্বালাময়ী বা আপত্তিকর তথ্য বা মন্তব্য পোস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।
✏কারো ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি, ভিডিও অন্যত্র ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন এবং অন্যের গোপনীয়তা রক্ষা করুন।
✏মনে রাখুন যে কোনো পোস্ট বা মন্তব্যের পিছনে একজন মানুষ সত্তা রয়েছে তাই বিচার করার আগে শুধরাতে বলুন।
✏আপনি কি পাবলিশ করছেন এবং কিরকম ভঙ্গিতে করছেন তা যাচাই করুন।
✏কোথায় পাবলিশ করছেন সেখানের সভ্যতা সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
✏লিঙ্গ ভেদে কমিউনিকেশন আলাদা হতে পারে এই বিষয়টিতে সচেতন থাকুন।
✏অন্যদের আশানুরূপ বিশ্বাসযোগ্য এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রদান করুন।
✏রসিকতা, উপহাস, ব্যঙ্গ ও বিদ্রুপ এড়িয়ে চলুন।
✏অন্যদের মেনে নিন এবং তাদের ভুল ক্ষমা করুন।
✏গ্রুপে অথবা অনলাইনে কাজের পরিবেশে আপনার দায়িত্ব সম্পর্কে সচেষ্ট থাকুন।
✏প্রতিক্রিয়া করার আগে অনুধাবন করুন এবং ভুল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন।
✏অন্যদের তথ্য প্রকাশের পূর্বে অনুমতি তৈরি করুন এবং তার কর্তৃত্ব স্বীকার করুন।
এছাড়াও বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নিজের বুদ্ধিভিত্তিক বিবেচনায় উন্নত আচরণ করুন।
ইন্টারনেট লিটারেসি
আমেরিকার মিনিস্ট্রি অফ ইন্টার্নাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড কমিউনিকেশনস ইন্টারনেট লিটারেসিকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে – ইন্টারনেট জ্ঞান হচ্ছে সাধারণ মানুষের ইন্টারনেট ব্যবহারের সক্ষমতা এই তিনটি বিষয় বিবেচনা করে,
১) ইন্টারনেটে অবৈধ এবং ক্ষতিকারক বিষয়গুলি কোনগুলো তা বোঝা ও তা থেকে দুরে থাকার ক্ষমতা,
২) ইন্টারনেটের মাধ্যমে সঠিকভাবে এবং অপরকে সম্মান করে যোগাযোগ করার ক্ষমতা এবং,
৩) নিজের বা নিজের অ্যাকাউন্টের ব্যক্তিগত তথ্যাদি গোপন রাখা এবং সুরক্ষার ব্যবস্থা করা৷
ইন্টারনেট হচ্ছে ছুরির মতো৷ অর্থাৎ এর অনেক ভালো ব্যবহার করা যায় আবার খারাপ ব্যবহারও করা যায়৷
বিশ্বের অনেক দেশ ইন্টারনেট শিক্ষাকে স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করে এই জ্ঞান মাধ্যমিক স্তর হতেই দেওয়া শুরু হয় যাতে এর সঠিক ব্যবহার করা যায়৷
ডিজিটাল দায়িত্বশীলতা শেখায় কিভাবে গুজব বা অসত্য তথ্য চিহ্নিত করে পরিহার করা যায়, অপরের সাথে সম্মানের সাথে কথা বলা যায় এবং নিজের তথ্য বা অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখা যায়৷
তাঁদের শেখানো হয় ইন্টারনেটের নৈতিকতা – অপরের ছবি বা তথ্য ব্যবহার করার সময় তাঁদের অনুমতি নেয়া এবং উৎসের নাম উল্লেখ করা – দেশের বিদ্যমান আইন সম্পর্কে জানা এবং আইন লঙ্ঘন না করা ইত্যাদি৷
এছাড়াও সাইবারবুলিইং বা ডিজিটাল হয়রানি কীভাবে প্রতিরোধ করা যাবে এবং কোন সংস্থাগুলোর কাছে সাহায্য চাইতে হবে, সেটাও শেখানো হয়৷
ইন্টারনেটে আদবকেতা এবং লিটারেসি দিয়ে আপনার ইন্টারনেট জগৎ হোক সত্যনিষ্ঠ, বস্তুনিষ্ঠ এবং আদর্শিক।
শুভকামনা,
Written by:
A. Rouf Ahmmad (Ishan)
CA & Team Coordinator, TES
World University of Bangladesh