পুরো বিশ্ব জুড়ে এখন ভয়াবহ আতংকের নাম কোভিড-১৯ বা যাকে আমরা সাধারণত করোনা ভাইরাস নামেই জানি। করোনা ভাইরাসের ৭ টি প্রজাতির মধ্যে (SARS COV-2) এর জন্যে দ্বায়ী। একে ইতিমোধ্যে বৈশ্বিক মহামারী বা (pandemic) হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১১ই মার্চ, ২০২০ তারিখে। বাংলাদেশে ৮ই মার্চ প্রথম বারের মতো এই ভাইরাসটি শনাক্ত হয় এবং ইতিমোধ্যে ১৫৫ জন মানুষ এই ভাইরাসটি দ্বারা মারা গিয়েছে।
✍কেন পিপিই??
ভয়ংকর রুপ নিয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পরা করোনা ভাইরাস এর সংক্রমণ রোধে সবচাইতে বেশি কার্যকরি উপকরন হচ্ছে পিপিই (Personal protective equipment) বা ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম। পিপিই মূলত ব্যবহার করা হয় এই রোগের চিকিৎসার সঙ্গে জড়িতদের জন্য এবং যেখানে সংক্রমণের ঝুকি রয়েছে সেখানে ব্যবহার আবশ্যক. যেহেতু করোনা ভাইরাস মানুষের মাধ্যমেই ছড়ায় তাই চিকিৎসা কাজে পিপিই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে এর বড় এক্টা কারন হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, প্রতি দশ জন রোগীর মধ্যে একজন চিকিৎসক দের মাধ্যমেই সংক্রমিত হয়।
✍পিপিই এর উপকরণঃ
পর্যাপ্ত সুরক্ষার জন্য পিপিই তে মূলত পাঁচটি উপকরণ থাকতে হয়,
১.জুতার কভার সহ গাউন.
২.হাতে পরার গ্লাভস.
৩.চোখ ঢাকবার জন্য মুখের সাথে পুরোপুরি লেগে থাকে এমন চশমা বা গগলস(goggles)
৪.মুখের আবরন বা ফেস শিল্ড
৫.মাস্ক
এবং এটি একজনকে অবশ্যই সর্ব্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করে পরতে ও খুলতে হয় কারন এই পক্রিয়ার মাধ্যমে অনেক সময় পিপিই দূষিত হবার সম্ভাবনা থাকে..
✍পিপিই তৈরিতে ব্যবহৃত ফেব্রিকসঃ
পিপিই মূলত কোন কাপড়(ফেব্রিকের) তৈরি হতে হবে সে সম্পর্কে কোন সুনির্দিষ্ট ধারণা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা এনএইচএস এর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি তবে পিপিই তৈরিতে এমন কাপড় ব্যবহার করতে হবে যা কোন ভাবে তরল শুষে নেবে নাহ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিত পোশাক নীতিমালায় বলা হয়েছে পিপিই হচ্ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্ত থেকে চিকিৎসা দেওয়ার বিশেষ পোশাক। এই পোশাক হতে হবে তিন স্তরের, ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী এবং স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের উপযোগী..এবং এই পোশাকে থাকবে কম্বো পিপিট কভারঅল, হেড মাস্ক,মেডিক্যাল মাস্ক গগলস বুট এবং সু কভার এসব পোশাক হবে ডিসপোজেবল (একবার পরার পর ফেলে দিতে হবে)
✍বাংলাদেশী পিপিই এবং এর কার্যকারিতাঃ
বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ১২ টি পোশাক-কারখানা পিপিই তৈরি করছে তবে এসব পিপিই সঠিক নিয়ম মেনে তৈরি হচ্ছে কিনা তা একটি প্রশ্ন থেকেই যায় যে, সঠিক এবং সুরক্ষিত পিপিই হতে হবে রাসায়নিক দ্রব্যের ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধযোগ্য (ক্যামিকাল হ্যাজার্ড প্রিভেন্টেবল) এবং এই পিপিই যেকোন ফেব্রিক্স দিয়ে তৈরি করা যাবে নাহ। বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পলিয়েস্টার ১৯০টি বা (polyester-190T) নামের ফেব্রিক্সকে পিপিই বানাতে অনুমোদন দিয়েছে. তবে বাংলাদেশে পিপিই এর নামে যা তৈরি হচ্ছেবতা মূলত রেইনকোর্ট ধরনের ওয়াটার প্রুফ জ্যাকেট গাউন যা দিয়ে সুরক্ষা নিশ্চিত তো হবেই না বরং বিপদের মুখে ফেলে দেবে চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের। বিশেষজ্ঞরা এই বিষয় নিয়ে বলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিত ক্রাইটেরিয়া গুলো পূর্ণ হলেই কেবল ১টি৷ পরিপূর্ন পিপিই তৈরি করা সম্ভব এবং এই মহামারি থেকে পরিত্রান পেতে পিপিই এর বিকল্প নেই।
সুত্র গুলো, গুগল, উইকিপিডিয়া এবং বিভিন্ন পত্রিকা থেকে নেওয়া..
লেখক:
আরাফাত খান প্রীতম,
ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং,
ডক্টর এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ,পীরগঞ্জ,রংপুর
ব্যাচঃ ২য়